শপথ গ্রহণের পরই বলেছিলেন, ‘‘ভারত এক পা এগোলে তিনি দু’কদম বাড়াবেন।’’ এ বার কর্তারপুর করিডর উপলক্ষ্যে সীমান্তের ওপার থেকে শান্তির বার্তা পাঠালেন ইমরান খান। আর ইমরানকে ধন্যবাদ জানিয়ে শের-শায়েরিতে নভজ্যোৎ সিংহ সিধু বললেন, “মেরা ইয়ার দিলদার ইমরান খান।”
ভারতের গুরদাসপুরে ডেরা বাবা নানক থেকে পাকিস্তানের করতারপুরে দরবার সাহিব পর্যন্ত এই ভিসামুক্ত করিডর দিয়ে যাতায়াত করতে পারবেন শিখ পুণ্যার্থীরা। পাকিস্তানের আমন্ত্রণে আজ ওই করিডরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরত কৌর বাদল ও হরদীপ সিংহ পুরী। সেইসঙ্গে হাজির ছিলেন পঞ্জাবের মন্ত্রী নভজ্যোত সিংহ সিধু।
কর্তারপুর করিডরের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইমরান বলেন,অতীত ভুলে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান তাঁরা। তাঁর কথায়, “ফ্রান্স ও জার্মানির অনেক বার যুদ্ধ হয়েছে। এর পরেও তাদের মধ্যে শান্তি ফিরেছে।তাহলে দীর্ঘদিনের বিবাদ ভুলে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে শান্তি ফিরবে না কেন?” বক্তৃতায় কাশ্মীর প্রসঙ্গে টেনে এনে ইমরান বলেন, “আমরা ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক চাই। দু’দেশের মধ্যে সমস্যা কেবল কাশ্মীর। দৃঢ়তা ও বড় স্বপ্ন দেখার ক্ষমতা থাকলে এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।” ইমরানের দাবি এই ধর্মীয় করিডর ভারত-পাক সম্পর্কের শীতলতায় কিছুটা হলেও উষ্ণতা নিয়ে আসবে, দু’পক্ষের বরফ গলবে। জনসাধারণের মঞ্চে সেনাপ্রধান থাকবেন কেন এই নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হলেও ইমরানের বক্তৃতার সময় সামনের সারিতেই বসে থাকতে দেখা যায় পাক সেনাপ্রধান কামার বাওয়েজাকে। তাঁর উপস্থিতিতেই ইমরান বলেন, “ভারতে পা দিলেই আমাকে শুনতে হয়েছে পাক সেনা দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় রাজি নয়। কিন্তু, আজ আমি জানিয়ে দিচ্ছি, পাকিস্তানের সেনা-সহ সব প্রতিষ্ঠানই ঐক্যবদ্ধ। আমাদের দল, অন্য রাজনৈতিক দল, আমাদের সেনা, সবাই ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই।”
এ দিকে ইসলামাবাদ সন্ত্রাস প্রশ্নে মদত দেওয়া বন্ধ না করলে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার কোনও জায়গা নেই বলে আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ। সার্ক শীর্ষ সম্মেলনেও ভারত যোগ দেবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও কর্তারপুর করিডরে সিধুর উপস্থিতি ও শের-শায়েরি বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। ইমরানের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে পাক সেনাপ্রধানকে আলিঙ্গন করে সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন সিধু। এ বারও তাঁর পাকিস্তান সফরের সমালোচনা করেছে বিজেপি ও শিরোমণি অকালি দল। পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহও জানিয়েছেন, তিনি সিধুকে পাকিস্তান সফরে যেতে নিষেধ করেছিলেন। এ দিন বক্তৃতায় ইমরানের ভূয়সী প্রশংসা করে শায়েরির ঢঙে সিধু বলেন, ‘‘মেরা ইয়ার দিলদার ইমরান খান জিবে।” ইমরানও বলেন, ‘‘গত বারের সফরের পরে সিধুকে অনেক সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল। উনি তো কেবল শান্তির কথাই বলেছিলেন। সিধু পাকিস্তানে এত জনপ্রিয় যে এ দেশেও উনি নির্বাচনে জিততে পারবেন।”
Be the first to comment