ক্ষমতায় আসার পরেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ঘোষণা করেছিলেন, দেশের আর্থিক অবস্থা শোচনীয়। তবে তিনি অর্থনীতির হাল ফেরাবেন। তাঁর আবেদনে ‘বিদেশী বন্ধুরা’ পাকিস্তানকে সাহায্য করবে। কিন্তু নতুন সরকার ১০০ দিন অতিক্রম করার একদিন পরে শুক্রবার ডলারের তুলনায় রেকর্ড পড়ল টাকার দাম।
এদিন এক ডলারের দাম হয়েছে পাকিস্তানি মুদ্রায় ১৪৪ টাকা। বৃহস্পতিবার ডলার পিছু পাকিস্তানি টাকার দাম ছিল ১৩৪ টাকা। শুক্রবার সকালেই ডলারের দাম হয় ১৪২ পাকিস্তানি টাকা। বিকালে আরও দু’টাকা কমে যায়। স্টেট ব্যাঙ্ক অব পাকিস্তানের এক কর্তা জানিয়েছেন, মুদ্রার মূল্যহ্রাস রুখতে শীঘ্রই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ইমরান খান ঘোষণা করেছিলেন, তিনি আইএমএফকে ঋণ মকুবের জন্য বলবেন না। তাঁর ‘বিদেশী বন্ধু’ সৌদি আরব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পাকিস্তানকে ৩০০ কোটি ডলার দেবে। বাস্তবে দিয়েছে ১০০ কোটি। এর পরেই পাকিস্তান ঋণ মকুবের জন্য আইএমএফের শরণাপন্ন হয়। বাজারে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে ডলার কিনে রাখতে চেষ্টা করেন। তার ফলেই কমতে থাকে পাকিস্তানি মুদ্রার দাম।
বৃহস্পতিবারই সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে ইমরান খান বলেছিলেন, আমাদের দেশ বিকাশের সঠিক পথে অগ্রসর হচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা এদেশে আসছেন। কিন্তু তার পরদিনই যেভাবে পাকিস্তানের টাকার দাম কমেছে, তাতে ইমরানের কথায় বিশ্বাস করতে পারছেন না অনেকেই। জলসম্পদ মন্ত্রী ফয়জল ওয়াদা বলেছেন, মুদ্রার এই ব্যাপক অবমূল্যায়নের কারণ হল কালোবাজার। তাঁর কথায়, আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম, তখন ব্ল্যাক মার্কেটের যে রমরমা ছিল, এখনও তাই আছে। তবে সরকার টাকার দাম বাড়ানোর জন্য ব্যবস্থা নেবে শীঘ্র।
ইমরান ক্ষমতায় আসার পরেওই বলেছিলেন, পাকিস্তান থেকে দুর্নীতি দূর করবেন। কিন্তু তাঁরই মন্ত্রী যেভাবে কালোবাজারের বাড়বাড়ন্তের কথা মেনে নিয়েছেন, তাতে সরকারের ব্যর্থতাই প্রমাণিত হয় বলে পর্যবেক্ষকদের ধারণা।
পাকিস্তানের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ জুবের সালিম আশঙ্কা করছেন, মুদ্রার দাম কমার ফলে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির খরচ বাড়বে। তার ফলে আগামী দিনে মুদ্রার আরও অবমূল্যায়ন হতে পারে।
Be the first to comment