এখন শুধু সরকারী সিলমোহরের অপেক্ষা, জনমত থেকে সমীক্ষা সবেতেই এগিয়ে ইমরান

Spread the love
পাকিস্তানে সরকার গড়ার লড়াইয়ে এখন বাকীদের পিছনে ফেলে দিয়েছে ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (PTI) ৷ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ভোটগণনায় দেরি না হলে বুধবার রাতেই পাকিস্তানের তখত নিশ্চিত হয়ে যেত ইমরানের ৷ সরকার গড়ার জন্য ম্যাজিক ফিগার ১৩৭ ৷ আপাতত ১১৩টি আসনে এগিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ৷ ৬৪টি আসন পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে পাকিস্তান মুসলিম লিগ (PML(N) ৷ ৪৩টি আসনে এগিয়ে বিলাবল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টি (PPP) ৷ বুধবার গণনার ট্রেন্ড যতো সামনে আসে ততোই উল্লাস বাড়তে থাকে তেহরিক-ই-ইনসাফ শিবিরে ৷ পিটিআইয়ের ট্যুইটার পেজেই লেখা হয় ‘‘প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের জন্য আপনারা তৈরি তো ? ’’
পাকিস্তানে ভোটের উপর বুধবার গোটাদিনই  নজর ছিল দিল্লির। নতুন পাক সরকারের থেকে এখনই কিছু পাওয়ার নেই। পাকিস্তানের ভোট নিয়ে মত বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতে, পাক সেনাকে অগ্রাহ্য করে কাশ্মীর নিয়ে নতুন সরকার নীতি বদলাবে, তা এখনই ভাবা ভুল। এরপরেও ভারতের দাবি মতো নতুন সরকারের কাছে চ্যালেঞ্জ থাকবে দেশের জঙ্গি সংগঠনগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করা এবং সীমান্তে পাক সেনার উসকানি বন্ধ করা। যা এখনই সম্ভব নয় বলেই দাবি কূটনৈতিক মহলের।
দিল্লি লাহোরে বাস পাঠিয়েছিল। বদলে কার্গিল পেয়েছিল। বিদেশ সফর থেকে ফেরার পথে মোদি লাহোরে নেমেছিলেন। উল্টে পাঠানকোট তোফা ছিল ইসলামাবাদের। এরমধ্যে ২৬/১১ দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ককে অনেক আগেই ভাগ করে দিয়েছে। তাই বুধবার পাকিস্তানের নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে থাকলেও, নতুন পাক সরকারের থেকে তেমন কোনও প্রত্যাশা করা উচিত নয় ভারতের, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের। কারণ, এবারও পাক নির্বাচনে ইমরান খান থেকে শাহবাজ শরিফের গলায় চড়া ভারত বিরোধী সুর।
জনমত থেকে বুথ ফেরত সমীক্ষা বলেছে পাকিস্তানে এবার এগিয়ে ইমরান খানই। বিরোধীদের অভিযোগ, তাঁর পিছনে রয়েছে পাক সেনার মদত। সেই দিকেও নজর রয়েছে দিল্লির। কারণ, ক্রিকেটার ইমরান খানের সঙ্গে রাজনীতিক ইমরান খানের আকাশ-পাতাল ফারাক। প্রায় কুড়ি বছর পাক রাজনীতিতে নিজের জমি তৈরি করে এবার তখতের অনেক কাছে তেহেরিক-ই-ইনসাফের প্রধান। তাই ভারত নিয়ে রাতারাতি তাঁর মনোভাব বদলে যাবে এটা ভাবা ভুল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তানে ভোটের ফলাফল নিয়ে এখনই প্রতিক্রিয়া দেওয়ার সময় আসেনি। বরং নতুন সরকারকে স্বাগত জানানোই শ্রেয়। তবে এবারের সাধারণ নি‍র্বাচনে ইতিবাচক দিক একটিই। এই নিয়ে দ্বিতীয়বার কোনও সামরিক সরকারের হাত থেকে কোনও অসামরিক সরকারের হাতে ব্যাটন বদল হতে চলেছে পাকিস্তানে।
কূটনৈতিক মহলের মতে, ইসলামাবাদ যে-ই সরকার করুক না কেন, তার সামনে ফের একাধিক চ্যালেঞ্জ থাকবে। ভারতের সঙ্গে নতুন করে সম্পর্ক তৈরি করতে হলে, তখতে বসেই কাশ্মীর নিয়ে সুর নরম করতে হবে। আর সুর নরম করলেই ফের পাক সেনার কোপে পড়তে হবে সেই সরকারকে। কারণ, পাক সেনাকে অগ্রাহ্য করে কোনও সরকারই সে দেশে টিঁকতে পারেনি। নতুন সরকারের পক্ষেও তা সম্ভব না-ও হতে পারে। একমাত্র উপায় যদি ৩৪২ আসনের পাক সংসদে কোনও দল নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে। তাতেও যে স্বস্তি থাকবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই সরকারকে সামলাতে হবে জঙ্গি সংগঠনগুলিকে। ভারতের দাবি মেনে ২৬/১১-র মূল চক্রীদের শাস্তি দিতে হবে। রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার জায়গায় যা প্রায় অসম্ভব।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*