১১ রানে আফগানিস্তানকে হারিয়ে চলতি বিশ্বকাপে আবারও জয় পেলো ভারত। তবে এদিন তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ আফগানিস্তানকে হারাতে বেশ বেগ পেতে হলেও শেষ পর্যন্ত মহম্মদ শামির দুরন্ত বোলিং জয় এনে দিলো ভারতকে। অন্যদিকে ২টি করে উইকেট নিয়ে বুমরাকে যোগ্য সঙ্গত দেন চাহাল ও হার্দিক পান্ডিয়া। বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে হ্যাটট্রিক সহ ৪টি উইকেট নিলেন মহম্মদ শামি। এদিন আফগানিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ৫২ রান করেন মহম্মদ নবি।
শনিবার ২২৫ রান তাড়া করলেই চলতি বিশ্বকাপে জয় পেতো আফগানিস্তান। এই অবস্থায় ব্যাট করতে নেমে ভারতীয়দের ভালো বোলিংয়ের জেরে প্রথমেই চাপে পড়ে যায় তারা। ২২৫ রান তাড়া করতে নেমে প্রথম দশ ওভারে মাত্র ৩৭ রান তোলেন আফগানরা। প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে দুর্দান্ত স্পেল মহম্মদ শামির। ৪ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে আফগানদের প্রথম উইকেটটি তুলে নেন তিনি। শেষ ওভারে মহম্মদ নবির উইকেট সহ হ্যাট্রিক করেন শামি। অপর ওপেনার গুলবদিনকে ফেরান হার্দিক। এর পর ২৮তম ওভারে রহমত শাহ ও হাশমাতুল্লা শাহিদিকে আউট করেন বুমরাহ।
এদিন টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করেও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বড় রান তুলতে ব্যর্থ হয় টিম ইন্ডিয়া। ৮ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২২৪ রান তোলেন বিরাটরা। ভালো শুরু করেও বড় রান পেলেন না অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এদিন ভারত অধিনায়ক কোহলি ৬৩ বলে ৬৭ রান করে আউট হন। ৫২ রান করে ভারতকে সম্মানজনক জায়গায় নিয়ে যান কেদার যাদব ।
আফগানিস্তানের হয়ে ২টি করে উইকেট নেন মহম্মদ নবি ও গুলবদিন নাইব। একটি করে উইকেট নেন মুজিবুর রহমান, রশিদ খান এবং রহমত শাহ। মূলত মুজিব, নবি, রশিদ খানদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়েই ভারতকে কম রানে আটকে রাখে আফগানিস্তান।
জবাবে শুরুতে হজরতুল্লাহ ঝাঝাইয়ের উইকেট হারালেও ভারতীয় বোলিং আক্রমণের সামনে থিতু হওয়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক নাইব ও রহমত শাহ। দ্বিতীয় উইকেটে গুরুত্বপূর্ণ ৪৪ রান যোগ করে ব্যক্তিগত ২৭ রানে পান্ডিয়ার শিকার হন আফগান অধিনায়ক। কিন্তু তৃতীয় উইকেটে ৪২ রান ওঠার পর একই ওভারে দুই সেট ব্যাটসম্যান রহমত শাহ ও হাসমাতুল্লাহ শাহিদিকে আউট করে ম্যাচের রাশ ফের নিজেদের দখলে নিয়ে নেন জসপ্রীত বুমরাহ। রহমত ফেরেন ৩৬ রানে, হাসমাতুল্লাহ করেন ২১ রান।
এরপর নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকলেও স্বল্প রানের পুঁজি থাকায় আফগানদের হাত থেকে ম্যাচ কখনোই পুরোপুরি বেরিয়ে যায়নি। বরং ভারতীয় দলের চিন্তা বাড়িয়ে ব্যাট হাতে ঢাল হয়ে দাঁড়ান অভিজ্ঞ মহম্মদ নবি। বুমরাহ, শামি, চাহালদের আক্রমন সামলে একসময় জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে আফগানিস্তান। ৭ উইকেট খোয়ালেও একসময় সমীকরণ পুরোপুরি নিজেদের নাগালে নিয়ে আসে অপেক্ষাকৃত অনেকটাই দুর্বল আফগানিস্তান। শেষ তিন ওভারে তাদের জয়ের জন্য দরকার ছিল ২৪ রান। সেখান থেকে অভিজ্ঞতায় বাজিমাত করে যান ভারতীয় বোলাররা।
৪৮ তম ওভারে শামি খরচ করেন ৩ রান। ৪৯ তম ওভারে বুমরাহ দেন ৫ রান। শেষ ওভারে আফগানিস্তানের জয়ের জন্য প্রয়োজন হয়ে দাঁড়ায় ১৬ রান। অন স্ট্রাইক নবি প্রথম বল বাউন্ডারিতে পাঠালেও দ্বিতীয় বল ডট দেন শামি। এরপর দুরন্ত কামব্যাক করে পরপর তিন বলে তিন উইকেট তুলে নিয়ে দলের রুদ্ধশ্বাস জয় নিশ্চিত করেন শামি। সেইসঙ্গে চেতন শর্মার পর দ্বিতীয় ভারতীয় বোলার হিসেবে বিশ্বকাপে হ্যাটট্রিকের নজির গড়েন বঙ্গ পেসার। এই জয়ের ফলে ইংল্যান্ডকে টপকে লিগ টেবিলে তিন নম্বরে উঠে এলেন কোহলিরা। ৫ ম্যাচে ভারতের সংগ্রহ ৯ পয়েন্ট।
Be the first to comment