অগ্ন্যুৎপাত ও সুনামিতে বিধ্বস্ত টোঙ্গার পাশে দাঁড়াল ভারত। বিপর্যয়ের জেরে চরম বিপাকে পড়া দ্বীপরাষ্ট্রটির জন্য দু’লক্ষ মার্কিন ডলার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছে নয়াদিল্লি।
ভারতের বিদেশমন্ত্রককে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে টোঙ্গার হাতে দু’লক্ষ মার্কিন ডলার বা দেড়শো কোটি টাকা তুলে দেওয়া হবে। পাশাপাশি, বিপর্যস্ত দেশটির সরকার ও জনতার প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে নয়াদিল্লি। উল্লেখ্য, গত ১৫ জানুয়ারি প্রশান্ত মহাসাগর লাগোয়া ছোট্ট দ্বীপদেশটি প্রকৃতির রোষের মুখে পড়ে। স্যাটেলাইট থেকে তলা ছবিতে দেখা গিয়েছিল, দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে গর্ভে থাকা হাঙ্গা টোঙ্গা হাঙ্গা হোপাই নামে আগ্নেয়গিরি জেগে উঠেছে। শুরু হয় অগ্ন্যুৎপাত। এলাকা ঢেকে যায় কালো ছাই ও ধোঁয়ায়। এই লাভা উদগীরণের জেরে আশপাশের সমুদ্রতলে বিশাল আলোড়নের জেরে সুনামির উৎপত্তি। টোঙ্গা উপকূলে আছড়ে পড়তে থাকে অতিকায় সব ঢেউ। রাতারাতি সৃষ্টি হয় বন্যা পরিস্থিতি।
এহেন জোড়া বিপর্যয়ের জেরে কেবল, ইন্টারনেট পরিষেবা – সমস্ত বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় কার্যত একলা হয়ে যায় প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশ টোঙ্গা। প্রতিবেশী দ্বীপ ফিজির সঙ্গে টোঙ্গার সংযোগকারী ৮২৭ কিমি দীর্ঘ কেবল লাইন ধ্বংস হওয়ায় চটজলদি ত্রাণও পাঠানো সম্ভব হচ্ছিল না। তবে গত সপ্তাহে বহু প্রতিকূলতা পেরিয়ে অবশেষে টোঙ্গায় ত্রাণ পৌঁছয়।
এক্ষেত্রে ত্রাতা নিউজিল্যান্ড এবং অস্ট্রেলিয়া। নিজেদের সামরিক বাহিনীর সাহায্যে পানীয় জল, ওষুধপত্র, অস্থায়ী তাঁবু-সহ জরুরিকালীন পরিস্থিতিতে অতি প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে টোঙ্গার মূল বিমানবন্দরে নামে বিমান। অগ্ন্যুৎপাতের জেরে ছাইতে ঢেকে যাওয়া বিমানবন্দর এখনও সাফ করা সম্ভব হয়নি। অস্ট্রেলিয়ার তরফে বাড়তি সাহায্যের জন্য পাঠানো হয়েছে সাফাইকর্মীদেরও। তাঁরাই আপাতত ছাই-ভস্মে ঢাকা বিমানবন্দরটির সাফসুতরোর দায়িত্ব নিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, টোঙ্গা অগ্ন্যুৎপাতে ছবি বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, হিরোশিমায় পারমাণবিক বিস্ফোরণে যে পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন হয়েছিল, তার চেয়ে ১০০ গুণ বেশি শক্তি তৈরি হয়েছে এই অগ্ন্যুৎপাতে!
Be the first to comment