মঙ্গলবার জেনেভায় মানবাধিকার কাউন্সিলের বৈঠকে উঠতে চলেছে জম্মু-কাশ্মীর ইস্যু ৷ ৯ সেপ্টেম্বর থেকে সুইৎজারল্যান্ডের জেনেভায় শুরু হয়েছে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার সংসদের (UNHRC) ৪২ তম অধিবেশন। চলবে ২৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই অধিবেশনে ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশই যোগ দিয়েছে। অধিবেশনে জম্মু ও কাশ্মীরে মানবাধিকারের বিষয়টি তুলবে বলে পাকিস্তান জানিয়েছে। তবে পাকিস্তানের বিরোধিতায় পাল্টা প্রস্তুতি নিয়েছে ভারতও।
অধিবেশনে যোগ দিতে ইতিমধ্যেই পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহেমুদ কুরেশি জেনেভা গেছেন ৷ তিনি অধিবেশনে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করবেন ৷ অধিবেশনে যোগ দেওয়ার আগে তিনি টুইট করেছেন, জম্মু ও কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি পাকিস্তান অবশ্যই অধিবেশনে তুলবে। ভারতের তরফে প্রতিনিধি হিসেবে থাকছেন বিদেশমন্ত্রকের সচিব বিজয় ঠাকুর সিং ৷ এছাড়া থাকবেন ইসলামাবাদের ভারতীয় দূতাবাসের হাইকমিশনার অজয় বিসারিয়া ৷ আজ দুপুরে পাকিস্তানের প্রতিনিধি কুরেশি অধিবেশনে তাঁর বক্তব্য রাখবেন। তাঁর বক্তব্যের পর ভারতের প্রতিনিধি তাঁর বক্তব্য পেশ করবেন ৷ কিন্তু ভারতের তরফে জেনেভায় কোনও মন্ত্রীকে না পাঠিয়ে কেন শুধুমাত্র সচিবকেই পাঠানো হল, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ৷
৮ অগাস্ট জম্মু-কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করেছে ভারত সরকার। এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করেছে পাকিস্তান। যদিও আন্তর্জাতিক মঞ্চে তারা এই ইস্যুতে চিন ছাড়া কাউকে পাশে পায়নি। ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের বিষয়টিও অধিবেশনে পাকিস্তান তুলবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। জম্মু-কাশ্মীর ইস্যুতে পাকিস্তানের বক্তব্যের পাল্টা বেশ কয়েকটি বিষয় অধিবেশনে উত্থাপন করতে পারে ভারত ৷ সেগুলোর মধ্যে রয়েছে, পাকিস্তানে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার, জোর করে হিন্দু ও শিখদের ইসলামে ধর্মান্তরিত করা ইত্যাদি।
এছাড়া পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর এবং গিলগিট বালতিস্তানে শিয়া সংখ্যালঘুদের উপর হামলার বিষয়টিও বৈঠকে উত্থাপন করতে পারে ভারত ৷ ইতিমধ্যেই জম্মু-কাশ্মীর ইস্যুতে UNHRC-এর ৪৭টি সদস্য দেশের সমর্থন আদায় করতে সমর্থ হয়েছে ভারত ৷
এদিকে, জম্মু-কাশ্মীর ইস্যুতে যাতে দুইদেশের মধ্যে যাতে শান্তি বজায় থাকে তার জন্য ভারতের কাছে আবেদন জানিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের হাইকমিশনার মিশেল বাচলেট ৷ ভারতের কাছে তাঁর আবেদন , জম্মু ও কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ যাতে সঠিক পরিষেবা পায় সেই বিষয়টি নিশ্চিত করুক ভারত। এছাড়া সেখানে যাদের আটক করা হয়েছে তারাও যেন যোগ্য মর্যাদা ও সুবিধা পায়। ভারত ও পাকিস্তান দুই দেশের কাছেই মানবাধিকার সুরক্ষিত রাখার আবেদন জানিয়েছেন তিনি ৷ জম্মু-কাশ্মীর ইশুতে ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত নিতে মানিবাধিকারকে সুরক্ষিত রাখাই এই মুহূর্তে সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মনে করছেন ৷
মিশেলের এই আবেদনকে স্বাগত জানিয়েছেন কুরেশি ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ৷ UNHRC-কে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের বিষয়ে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করার আবেদন জানিয়েছেন ইমরান ৷ মিশেলের বক্তব্যের পাল্টা উত্তর ভারতের তরফে এখনও পাওয়া যায়নি ৷ তবে আজ অধিবেশনে ভারত তাদের প্রতিক্রিয়া জানাবে বলে খবর ৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতের এক আধিকারিকের কথায়, আমাদের যা বলার আমরা আজকের অধিবেশনে বলব ৷
Be the first to comment