সীমান্তে যতই উত্তাপ থাকুক, আলোচনার রাস্তা থেকে সরে আসছে না ভারত চিন কেউই। বাড়ানো হয়েছে নজরদারি, তারই মধ্যে মঙ্গলবার অর্থাৎ ৩০শে জুন ফের একবার বৈঠকে বসতে চলেছে নয়াদিল্লি-বেজিং। ইন্ডিয়া টুডের প্রতিবেদনের সূত্রে জানা গিয়েছে লাদাখ নিয়ে আরও একবার মুখোমুখি হতে চলেছে দুই দেশ।
থার্ড কর্প কমান্ডার স্তরে বৈঠক হতে চলেছে মঙ্গলবার। আগের দুটি বৈঠক চিন সীমান্তের মলডোতে হয়েছিল। তবে জানা গিয়েছে এবার বৈঠক হবে ভারত সীমান্তের চুশুলে। সূত্রের খবর, এই বৈঠকে দুই তরফের সেনার ডিসএনগেজমেন্ট বা পিছনোর বিষয়ে কথা হতে পারে।
বর্তমান পরিস্থিতিও উঠে আসতে পারে এদিনের বৈঠকে। মূলত লাদাখ সীমান্তে স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে দুই দেশই উদ্যোগী হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আগের দুটি কর্প কমান্ডার স্তরের বৈঠক হয় ৬ই জুন ও ২২শে জুন। ১৪ কর্পসের কমান্ডার, লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরিন্দর সিং ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। ২২শে জুন ১১ ঘণ্টা ধরে ম্যারাথন বৈঠক চলে। আর তারপরই সমাধান সূত্র কিছুটা সামনে আসে। শেষ পাওয়া খবরে জানা যায় পিছু হটতে রাজি হয়েছে চিনের সেনাবাহিনী।
দুই পক্ষই লাদাখ সীমান্ত থেকে সেনা সরানোর ক্ষেত্রে রাজি হয়। দুই দেশের মধ্যে ইতিবাচক কথাবার্তা হয় এদিন। দুই দেশের আর্মি অফিসার স্তরের বৈঠকও হয়। লাদাখের বিভিন্ন জায়গার পরিস্থিতি নিয়েও এদিন আলোচনা হয়। ইস্টার্ন লাদাখের পরিস্থিতিতে বিশেষ জোর দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে আগামিদিনেও আলোচনা হবে বলে জানা যায়। দুই দেশের লেফট্যানেন্ট জেনারেল স্তরের মধ্যে বৈঠক হওয়ার পর কীভাবে ক্রমশ সেনা সরানো হয়, সেদিকেই নজর ছিল।
১৫ই জুনের পর চিন জানিয়ে ছিল আর কোন সংঘর্ষ তারা ভারতের সঙ্গে চায় না। এই বৈঠকে চিনের কাছে কয়েকটি দাবি রাখে ভারত। নয়াদিল্লি চেয়েছিল ৪ঠা মের আগে গালওয়ান ভ্যালিতে দুই দেশের সেনার যে অবস্থান ছিল, তা ফের ফিরে আসুক। ভারতের এই বক্তব্য একেবারেই সহমত ছিল না বেজিং। কোনওভাবেই নিজেদের পুরোনো অবস্থানে ফেরত যেতে রাজি হয়নি চিন সেনা।
অন্যদিকে ভারতও নিজেদের দাবিতে অনড় ছিল। পরে জানা যায় গালওয়ান ভ্যালিতে অবশেষে কূটনৈতিক জয় হয়েছে ভারতের। পূর্ব লাদাখ সেক্টরে পিছু হটেছে চিন সেনা। ২২ শে জুনের বৈঠক ফলপ্রসূ হওয়ার পরেই এই সিদ্ধান্ত নেয় বেজিং। সরিয়ে নেওয়া হয় চিন সেনা জওয়ানদের ও সাঁজোয়া গাড়িগুলিকে।
তবে ফের অনুপ্রবেশ ঘটায় চিনা সেনারা। জানা যায়, নয়া পথ ধরে লাদাখের আরেক পাশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে চিন সেনা। উপগ্রহ চিত্রে দেখা যায় দৌলত বেগ ওলডি বা ডিবিও ও ডেপসাং সেক্টরে চিনা সেনার গতিবিধি নজরে এসেছে।
জুন মাসেই এই এলাকায় চিনের বেস ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে বলে মনে করা হয়। বেশ কয়েকটি গাড়িও নজরে আসে। ডেপসাং সেক্টরে চিনা সেনার আনাগোনা হতে পারে মে মাসেই এই খবর পেয়েছিল ভারতীয় সেনা। সেখানে নজরদারিও চলছিল। উল্লেখ্য ২০১৩ সালে প্রথম এই সেক্টরে চিনা সেনার অনুপ্রবেশ ঘটে।
Be the first to comment