গো-হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখাতে উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরে রাস্তায় নেমেছিলেন শয়ে শয়ে গ্রামবাসী। বিক্ষোভকারীদের ছোঁড়া পাথরের আঘাতে মৃত্যু হয়েছে ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার সিংয়ের। নিহত হয়েছে বছর কুড়ির এক যুবক সুমিতও। পুলিশ জানিয়েছেন, গত সোমবার ৩ ডিসেম্বর বিক্ষোভকারীদের দলেই সামিল ছিলেন এই যুবক। যদিও তাঁর পরিবারের দাবি, তিনি সেদিন কেবল রাস্তার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন।
এই ঘটনায় মঙ্গলবারই গ্রেফতার করা হয়েছিল তিনজনকে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছিল আরও চারজনকে। এফআইআর দায়ের হয়েছিল ৮৭ জনের বিরুদ্ধে। যাঁদের মধ্যে ছিলেন যোগেশ রাজ। যিনি বজরং দলের সদস্য এবং বুলন্দশহরের অন্যতম মাথা। এই যোগেশ আবার থানায় গিয়ে গো-হত্যার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। আর যোগেশ রাজের এই অভিযোগে উঠে এসেছে দুই নাবালকের নাম। একজনের বয়স ১১। আরও একজন ১২। পুলিশ জানিয়েছে, এরা দু’জন সম্পর্কে তুতো ভাই। এফআইআর দায়ের হয়েছে আরও পাঁচজনের বিরুদ্ধে।
গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, ওই অভিযোগে এমন অনেকেরই নাম রয়েছে যাঁদের কথা আগে শোনেননি তাঁরা। এ দিকে গো-হত্যার ঘটনায় নিজেদের নাম জড়িত দেখে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছে ওই দুই নাবালক। তাদের মধ্যে একজনের বাবা জানিয়েছেন, প্রথমে পুলিশ তাঁদের বাড়িতে এসেছিল।এরপর ডেকে পাঠানো হয় থানায়। দীর্ঘ চার ঘণ্টা জেরার পর পুলিশ ওই দুই নাবালকের নাম এবং বাড়ির ফোন নম্বর নিয়ে ব্যক্তিকে ছেড়ে দেয়। অভিযুক্ত দুই নাবালকের একজন জানিয়েছে, “এর আগে কখনও থানায় যাইনি। শরীর খারাপ লাগছিল। খুব কম কথা বলেছি।“
গত সোমবার বুলন্দশহরের নয়াবংশ গ্রামের বাইরে একটি জঙ্গলের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছিল ২৫টি গোরুর মৃতদেহ। প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন গ্রামবাসীরা। বিক্ষোভ সামাল দিতে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের আক্রমণেই মৃত্যু হয় ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার সিংয়ের। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিনের ঘটনায় জনতাকে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বজরং দলের জেলার মাথা যোগেশ রাজের বিরুদ্ধে।
এ দিকে ঘটনার দিন থেকেই পলাতক রয়েছে যোগেশ। বুধবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় যোগেশের একটি ভিডিওবার্তা। পুলিশের অনুমান, নিজের গোপন ডেরাতেই এই ভিডিও তুলেছে যোগেশ।তাঁর দাবি সে নির্দোষ। অন্যায় ভাবে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। ভিডিওতে যোগেশ বলেছেন, ঘটনার দিন অন্য গ্রামে ছিলেন। খবর পেয়ে বন্ধুদের নিয়ে ছুটে আসেন। এরপর থানায় যান অভিযোগ দায়ের করতে। সেখানে থাকাকালীনই খবর পান মারা গিয়েছেন পুলিশ ইনস্পেক্টর সুবোধ কুমার সিং ও গ্রামবাসী সুমিত।
Be the first to comment