শান্ত স্বভাবের মেধাবী ছাত্রের মৃত্যুটা এখনও মেনে নিতে পারছে না পরিবার ও প্রিয়জনেরা। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে মৃত স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর বাড়িতে কান্নার হাহাকারের মাঝেই একটা প্রশ্ন বারবার উঁকি দিচ্ছে, দোষীরা ছাড়া পেয়ে যাবেন না তো? বুধবার রাত সওয়া ১১টা নাগাদ মা-কে ফোন করেছিলেন স্বপ্নদীপ। কার্যত আর্তনাদ করে বলেছিলেন “মা তুমি এখনই এসো। আমাকে নিয়ে যাও। তোমাকে আমার অনেক কথা বলার আছে।” তিনি কী বলতে চেয়েছিলেন, সেটা আর জানা হল না মায়ের। তদন্ত নেমে সৌরভ চৌধুরী নামে এক প্রাক্তনীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মনোতোষ নামের আরও এক বোর্ডারকেও জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আর এখান থেকেই আরও ৪ প্রাক্তনীর দিকে নজর পুলিশের।
বৃহস্পতিবার সৌরভকে গ্রেফতার করার পর আজ তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে। পুলিশ সূত্রে খবর ইতিমধ্যেই সৌরভের কথার মধ্যে একাধিক অসঙ্গতি মিলেছে। বুধবার রাতে স্বপ্নদীপের সঙ্গে চা খেতে বেরিয়েছিলেন সৌরভ। এরপর স্বপ্নদ্বীপ হোস্টেলে পৌঁছে চার প্রাক্তনীর সঙ্গে প্রায় তিন ঘন্টা সময় কাটান। ঠিক তার পরেই পড়ুয়া হোস্টেলের করিডোর থেকে ঝাঁপ দেন। তদন্তকারী অফিসাররা মনে করছেন এই তিন ঘণ্টার মধ্যেই এমন কিছু ঘটেছিল যে কারণে নিজেকে শেষ করে দিতে বাধ্য হন স্বপ্নদীপ। তাহলে কি সমকামিতার যে কথা বারবার উঠে আসছে সেই বিষয় নিয়েই মৃত পড়ুয়াকে টার্গেট করা হয়েছিল? স্বপ্নদীপের বাবা-মা, মামা-মামিরা কেউ মানতে রাজি নন যে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। রামপ্রসাদের দাবি, “আমার ছেলেকে ওরা মারাত্মক র্যাগিং করেছে। প্রচণ্ড অত্যাচার করেছে। সেটা যাতে জানাজানি না হয়, তার জন্যই ওকে খুন করা হয়েছে।” স্বপ্নদীপের মায়ের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে প্রথম সৌরভের নাম উঠে আসে। যদিও চন্দ্রকোনার বাসিন্দা সৌরভ অত্যন্ত শান্ত স্বভাবের মেধাবী ছাত্র ছিলেন বলেই তার পরিবারের দাবি। অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছেন না যে সৌরভ এমন ঘটনা সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারেন।প্রশ্ন একটাই, এই অপমৃত্যুর পিছনে আসল কারণ কী? ঠিক কী ঘটেছিল সে দিন? উত্তর এখনও মেলেনি।
Be the first to comment