যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় এফআইআর ৭, গ্রেফতার ১, সকাল থেকেই থমথমে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর

Spread the love

রোজদিন ডেস্ক, কলকাতা:- যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় শনিবার রাতেই এক প্রাক্তনীকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তাঁকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। ওয়েবকুপা এবং পডুয়া দুই পক্ষের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবারের অশান্তি সংক্রান্ত মোট ৭টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। একাধিক জামিনযোগ্য ও জামিন-অযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে।

রবিবার বিকেলে কলকাতার পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা এক সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, ‘‘যাদবপুরের ঘটনায় মোট সাতটি এফআইআর রুজু হয়েছে। তার মধ্যে দু’টি স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে পুলিশ করেছে।’’ সাতটি এফআইআরের মধ্যে তিনটিই ওয়েবকুপার তরফে। তাদের অভিযোগে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর প্রতিরোধ আইনের ৩ এবং ৪ নম্বর ধারা, পশ্চিমবঙ্গ জনশৃঙ্খলা রক্ষা আইনের ৯ নম্বর ধারার পাশাপাশি ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারাও রয়েছে। ন্যায় সংহিতার ১২৬ (২) (অন্যায় ভাবে বাধা দেওয়া), ১১৮(১) (বিপজ্জনক অস্ত্র নিয়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে আঘাত করা), ৭৪ (মহিলাদের নিগ্রহ), ৫৪ (অপরাধের সময় উপস্থিত থাকা), ৩০৪ (ছিনতাই), ৩(৫) (জোটবদ্ধ ভাবে হামলা) নম্বর ধারা-সহ বিভিন্ন অভিযোগে এফআইআর দায়ের করেছে ওয়েবকুপা। রয়েছে ন্যায় সংহিতার ১০৯ নম্বর (খুনের চেষ্টা) ধারাও! অন্য দিকে, ক্যাম্পাসে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর অভিযোগে পড়ুয়াদের তরফেও পাল্টা এফআইআর দায়ের হয়েছে। এছাড়াও, স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে দু’টি এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। যে বা যাঁরা শনিবারের অশান্তির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁদের চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে।”
তৃণমূলপন্থী অধ্যাপকদের সংগঠন ওয়েবকুপার বার্ষিক সম্মেলনে ব্রাত্য বসুর যোগদান ঘিরে শনিবার উত্তাল হয়ে উঠেছিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। রাত পর্যন্ত ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছিল। একদিকে শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি এক পড়ুয়াকে চাপা দিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অধ্যাপকদের সঙ্গে বাম এবং অতিবাম ছাত্রদের সংঘর্ষও বাঁধে। অধ্যাপক ওম প্রকাশ মিশ্রকে তাড়া করার অভিযোগ ওঠে। শিক্ষামন্ত্রীর গাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠেছে। যার জেরে নাকি শিক্ষামন্ত্রী জখম হয়েছিলেন। এদিকে সংঘর্ষে জখম পড়ুয়াদের দেখতে হাসপাতালে গেলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পাঞ্জাবি ছিঁড়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে কয়েকজন ছাত্রীর বিরুদ্ধে। এই সব মিলিয়ে রবিবার সকালেও থমথমে পরিস্থিতি যাদবপুর ক্যাম্পাসে। এই সব সংঘর্ষের জেরে সব মিলিয়ে ৭টি এফআইআর হয়েছে।
অন্যদিকে, গভীর রাত পর্যন্ত জেনারেল বডির বৈঠকও হয় ক্যাম্পাসে। রবিবার সকাল থেকে থমথমে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসের সর্বত্রই ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ছেঁড়া ব্যানার হোডিং। তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত শিক্ষাবন্ধু সমিতির অফিস পুড়ে ছাই। অশিক্ষক কর্মচারীদের অফিসেরও অবস্থা একই।
উল্লেখ্য, এরইমধ্যে কাকভোরে আবার জানা যায় যাদবপুরের প্রাক্তনী সাহিল আলিকে পুলিশ মধ‍্যরাতে আটক করে। সাহিল ডিওয়াইএসএ-এর কর্মী বলে জানা যাচ্ছে। যদিও সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ জানা যায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*