মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে ইন্ডিয়ান চেম্বার অফ কমার্সের এক অনুষ্ঠানের উদ্বোধনে গিয়ে নিজের সাংবিধানিক পদের বিষয়ে মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। তিনি জানান, প্রতিটি কাজ তিনি সংবিধান মেনে করেন। রাজ্যপাল বলেন, আমি যখন রাজ্যপাল পদে শপথ নিয়েছিলাম তখন আমার হাতে একটাই বই তুলে দেওয়া হয়েছিলো। তা হলো ভারতের সংবিধান। আমি যা করি, তা সংবিধান মেনেই করি। আমি যদি সংবিধান থেকে বিচ্যুত হই তবে আপনারাই আমার বিরুদ্ধে বলবেন।
তবে মঙ্গলবার বক্তব্য রাখার সময় যাদবপুর কাণ্ডে নিজের মত প্রকাশ করতে নাম না করেই তিনি বলেন, ছাত্রদের জন্য আমাদের এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে হবে যেখানে তারা সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষা ব্যবস্থার পরিকাঠামো পায়। আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের উৎশৃঙ্খল হতে দিতে পারি না। এ জন্য কিছুকিছু ক্ষেত্রে পরিস্থিতি বদলের দরকার আছে। ধীরে ধীরে সেই বদলগুলি আনতে হবে। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করে যাবেন বলে জানান রাজ্যপাল। তিনি বলেন, আমি এই সফরে আসার আগে এই বিষয়ে পড়াশোনা করছিলাম। সেই সময় আমি উপলব্ধি করলাম যে হয়তো স্বাধীনতার পর এই এলাকায় রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ তৈরি করার ক্ষেত্রে প্রথম রাজ্যপাল আমিই হবো। এই এলাকার মন্ত্রী ও সচিবরা নিজেদের কাজে নিশ্চই খুব ব্যস্ত থাকেন। তবে আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে আমি তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখার সমস্ত রকম চেষ্টা করবো। সেই বিষয়টি শিলিগুড়িতে না হলেও অন্য জায়গায় করবো।
ভারতের অর্থনীতিকে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছে দিতে শিলিগুড়ির ব্যবসায়িক মহল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, ভারতকে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করতে আপনাদেরও অতিরিক্ত প্রচেষ্টা করতে হবে। আমি জানি, অনেক সমস্যা রয়েছে। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সেই সমস্যগুলো দূর করতে হবে। কেন্দ্রের পক্ষেও একই পদক্ষেপ নিতে হবে।
এছাড়াও ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে রাজ্যপাল বলেন, আপনারা ব্যবসা করতে এসেছেন। আপনাদের অন্য কাউকে তুষ্ট করে সেই কাজটা করা বাধ্যতামূলক নয়। কিন্তু অনেক সময়ই দেখা যায় যে পরিস্থিতির চাপে আপনাদের কাজটিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। সেই পরিস্থিতিতে আপনাদের সাহায্য করতে রাজভবনে একজন সৈনিক রয়েছে। আপনাদের আমি জানাতে চাই, সেই সৈনিক সবরকম পরিস্থিতিতে আপনাদের পাশে রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আপনারা সকলে মিলে একটি সৎ পরিবেশ গড়ে তুলবেন বলে আমার বিশ্বাস। অনেক সময় পরিস্থিতি এমন আসবে যখন আপনাদের সামনে বিশাল দেওয়াল খাড়া হয়ে থাকবে। দেখে মনে হবে তা পার করা সম্ভব না। তবে সম্মিলিতভাবে সেই দেওয়াল পার করা সম্ভব। কয়েক বছর আগেও এই অঞ্চলের সঙ্গে দেশের অন্য এলাকার আর্থিক সামঞ্জস্য ছিল না। তবে আজ পরিস্থিতি বদলেছে। শিলিগুড়ি ব্যবসার ক্ষেত্রে এক বিশাল সম্ভাবনাময় জায়গা। ধীরে ধীরে কোনও হুল্লোড় ছাড়াই কলকাতা থেকে ব্যবসার কেন্দ্র শিলিগুড়িতে স্থানান্তরিত হচ্ছে।
Be the first to comment