টুইটে ফের বিস্ফোরক রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ৷ তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে লিখেছেন, রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক ৷ এই নিয়ে আলোচনার জন্য সোমবার মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে তলব করেছেন তিনি ৷
রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত নতুন কিছু নয় ৷ তবে নির্বাচনের পর রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা প্রসঙ্গে সেই সংঘাত আরও তীব্র হয়েছে ৷ বারবার রাজ্য প্রশাসনকে একহাত নিতে দেখা গিয়েছে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে ৷ রাজ্য প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ করছে না বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি ৷ আবারও টুইটে সেই একই দাবিতে সরব হলেন রাজ্যপাল ৷ তিনি এই নিয়ে তাঁর একটি বার্তা টুইট করেছেন ৷ সেই পোস্টের ক্যাপশনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্যাগ করে তিনি লিখেছেন, “রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক ৷ নিরাপত্তা ক্ষেত্রে গুরুতরভাবে আপোস করা হচ্ছে ৷ এই কঠিন পরিস্থিতিতে রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে এবং ভোট পরবর্তী হিংসা রুখতে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা আমাকে জানানোর জন্য সোমবার ৭ জুন মুখ্যসচিবকে ডেকে পাঠিয়েছি ৷”
রাজ্যপালের দাবি, ভোটের পর সাংঘাতিক প্রতিহিংসা চলছে ৷ খুবই দুঃখজনক যে, এই অস্থিরতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া তো দূর, এটা চোখেই দেখছে না রাজ্য প্রশাসন ৷ তাঁর বার্তায় ধনকড় লিখেছেন, “অস্ত্র নিয়ে বড় আকারের গুন্ডামি চলছে ৷ লুঠপাট হচ্ছে ৷ সম্পত্তি ধ্বংস হচ্ছে ৷ কিছু লোকের হাতে ধর্ষণ ও হত্যার বহু ঘটনা ঘটছে, যাদের আইনের কোনও ভয় নেই ৷” বিরোধী দলের সমর্থরদের প্রতিহিংসামূলক হিংসার শিকার হতে হচ্ছে বলে দাবি করে রাজ্যপাল লিখেছেন,”শাসক দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার সাহস দেখানোর জন্য মানুষকে হিংসার নিশানা হতে হচ্ছে ৷” রাজ্যপাল আরও লিখেছেন যে, রাজ্যে স্বেচ্ছাচার ও আইনভঙ্গ চলছে ৷ শাসক দলের হার্মাদরা প্রতিনিয়ত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে আঘাত হানছে ৷ মানুষ পুলিশকে ভয় পাচ্ছে ৷ নিজের বাড়িতেই থাকার জন্য এবং নিজের ব্যবসা করার জন্য তাঁদের তোলাবাজি ফি দিতে হচ্ছে ৷
ভোটের পরে হিংসা রুখতে রাজ্য প্রশাসন কী কী পদক্ষেপ করেছে, তার একটি রিপোর্ট তলব করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। মুখ্যসচিবকে তিনি আগামিকাল এই রিপোর্ট পেশ করতে বলেছেন তিনি ৷
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে কুণাল ঘোষ বলেন, “ওঁ একজন অতৃপ্ত আত্মা। বিজেপির দালাল। নির্লজ্জের মতো নির্বাচনের আগে একজন রাজ্যপাল পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন। যেটা রাজ্যপাল পদে থেকে দেওয়া যায় না। বাংলার মানুষ এই ডাক প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাই অতৃপ্ত আত্মা, মানসিক অবসাদগ্রস্ত বৃদ্ধের এখন টুইট করাই কাজ।”
রাজ্যপালের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি দাবি করেছেন, উস্কানিমূলক মন্তব্য করছেন রাজ্যপালই। উল্লেখ্য, রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত নতুন কিছুই নয়। নির্বাচনের পর থেকে টুইট বাণে তা আরও প্রকট হয়ে উঠেছে। সেক্ষেত্রে রাজ্যপাল অনেক সময় সাংবিধানিক সীমা লঙ্ঘন করছেন বলে অভিযোগ করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
Be the first to comment