রাজ্যপাল কেন্দ্রীয় সরকারের এজেন্টঃ জগদীপ ধনকড়

Spread the love

রাজ্যের সঙ্গে সংঘাত আরও একধাপ বাড়িয়ে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় জানিয়ে দিলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে নালিশে কিছু এসে যায় না। রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে শনিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে নালিশ জানায় তৃণমূল। রবিবার বিষয়টি সাংবাদিকদের জানান তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যপাল সোমবার শিলিগুড়িতে বলেন, রাজ্যে সমান্তরাল প্রশাসন চালাচ্ছি না । সাংবিধানিক দায়িত্ব মেনেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মানুষের কাছে যাচ্ছি। আগামীদিনেও আমার এই কর্মসূচি চালু থাকবে। যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

আজ শুরু থেকেই সরকারকে আক্রমণ করে কথা বলছিলেন রাজ্যপাল জাগদীপ ধনকড়। শিলিগুড়ি স্টেট গেস্ট হাউসে সাংবাদিকদের প্রশ্নে কার্যত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বাউন্সার ছাড়েন তিনি। রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকদের তাঁর সঙ্গে দেখা না করা নিয়েও মন্তব্য করেন। বলেন, যদি আমি রাজ্য সরকার চালাতাম তাহলে আজ বাগডোগরা বিমানবন্দর থেকে শিলিগুড়ি আসার পথে রাস্তাজুড়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাটআউট নয়, আমার কাটআউট থাকতো। গত ৫০ দিন ধরে রাজ্যের মুখ্য সচিবের সঙ্গে আমার দেখাই হয়নি। জেলাশাসক আমার সঙ্গে দেখা করেন না। এমন একটাও দৃষ্টান্ত দেখাতে পারবেন না যেখানে রাজ্যপাল কিছু করেছেন যাতে সরকারের কাজে প্রভাব পড়েছে। তাহলে আমি কেমন করে সমান্তরাল প্রশাসন চালালাম?

রাজ্যপাল আরও বলেন, আমি যেখানে যাই জেলা প্রশাসনকে আগাম জানিয়ে গিয়েছি। এটা আমার সাংবিধানিক কাজ এবং দায়িত্ব। এই কাজ করতে আমি পিছপা হব না। কাউকে ভয় পাব না। রাজ্যপাল কেন্দ্রীয় সরকারের এজেন্ট, একথা ঠিক। এটাই সংবিধানে লেখা আছে।

রাজ্যপাল আরও বলেন, কে কী বলছে তা আমি জানি না। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী কখনও আমাকে চিঠি লিখে বা সামনাসামনি জানাননি আমি আমার কাজে নিজের ভূমিকা এবং দ্বায়িত্ব অতিক্রম করছি। তিনি যদি কখনও আমাকে এনিয়ে জানান, আমি তাঁকে উত্তর দেবো। তবে তা মিডিয়ার সামনে নয়। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের পরিস্থিতি দেখতে জেলা শাসকের অফিসে গিয়ে কাউকে না পেয়ে ফিরে আসার বিষয়েও সরকারকে আক্রমণ করেন তিনি। তিনি যাবেন এটা জানার পরও কীভাবে কোনও প্রশাসনিক আধিকারিক উপস্থিত ছিলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। বলেন, অতীতে সিঙ্গুর এবং নন্দীগ্রামে গিয়েছি। ভবিষ্যতেও সিঙ্গুর এবং নন্দীগ্রামে আবার যেতে চাই। রাজ্যের হাফডজন মন্ত্রী আমাকে প্রতিনিয়ত আক্রমণ করছেন। মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয়ই সেগুলি নোট করছেন। সাংসদরা সংসদে কী নিয়ে আলোচনা করতে চান তা তাঁদের নিজস্ব বিষয়। তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। কিন্তু রাজ্যপাল হিসেবে আমি আমার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাব।

এদিন রাজ্যপালের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী প্রসঙ্গ উঠলে তিনি আরও বলেন, আমার নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে আমি কখনোই কেন্দ্রকে চিঠি দিইনি। আমি রাজ্য সরকারকে চিঠি দিয়েছিলাম। তাহলে কেন্দ্রীয় বাহিনী কি রাজ্যের তরফেই মোতায়েন করা হয়েছে? এর উত্তরে রাজ্যপাল সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা এই প্রশ্ন আমায় না করে রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানদের কাছে মেইল করুন অথবা সরাসরি তাঁদের জিজ্ঞাসা করুন। তাঁদের কাছে জানতে চান কেন বারংবার রাজ্যপাল এবং তাঁর ভূমিকা নিয়ে মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হচ্ছে।

আজ ফের রাজ্যপাল রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এর আগে মুর্শিদাবাদে গিয়ে তিনি জানিয়েছিলেন, ৬ দিনে তাঁর কাছে ৩ হাজার অভিযোগ এসেছে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে। আজও অভিযোগ করেন যে, কেন্দ্রীয় সরকারের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পের সুবিধা রাজ্যের অর্ধেক মানুষ পান না। বলেন, রাজ্যের কিছু একটা প্রকল্প থাকলে এত আবেদন রাজভবনে আসছে কেন? রাজ্যপালের কাছে থাকা টাকা ২১ টি ক্ষেত্রে খরচের কথা, তা কি শুধুমাত্র স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে খরচ করা সম্ভব?

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*