‘মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য করবেন। একেবারে রাজ্যপালই করে দিন।’ রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর টুইট প্রসঙ্গে রবিবার পাহাড় সফরে গিয়ে এই ভাষাতেই খোঁচা দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় । একইসঙ্গে ‘মা ক্যান্টিন’ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তোপ দাগেন তিনি।
এদিন বাগডোগরা বিমানবন্দরে নেমে মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর করার দাবি প্রসঙ্গে সরাসরি শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে একহাত নেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তাঁর পাল্টা কটাক্ষ, ‘শিক্ষামন্ত্রী বলছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর করবেন। উনি ওঁকে রাজ্যপালই করে দিন। তাহলেই হয়ত আপনার শান্তি হবে।’ একইসঙ্গে রাজ্য ও মন্ত্রীদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘এই আচরণ অনুচিত।’
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি রাজ্যের ১১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন আচার্য তথা রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। কিন্তু তাঁর আহ্বানে উপাচার্যরা সাড়া দিচ্ছেন না বলে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই অভিযোগে সরব হন রাজ্যপাল। শিক্ষাক্ষেত্রে ‘দলবাজি চলছে’ বলে অভিযোগ তোলেন তিনি। রাজ্যপালের পরপর এই ধরনের টুইটের পরই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু পাল্টা টুইট করে লেখেন, ‘ঔপনিবেশিক রীতি মেনে রাজ্যপালকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য করার নিয়ম চালিয়ে যাওয়া উচিত নাকি বিশিষ্ট বা শিক্ষাবিদদের এই পদে মনোনীত করা যায়? তা ভেবে দেখার সময় এসেছে। আমরা বিচার করে দেখব, দরকার হলে আইনজ্ঞদের পরামর্শ নেব যে অন্তত অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য আচার্য পদে মুখ্যমন্ত্রীকে আনতে পারি কিনা।’ পাহাড় সফরে গিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর এই টুইটেরই জবাব দিলেন রাজ্যপাল।
এদিন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগেও সরব হয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। মুখ্যমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে তৈরি হওয়া ‘মা ক্যান্টিন’ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন তিনি। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে তোপ দেগে তিনি বলেন, ‘মা ক্যান্টিনের টাকা নিয়েও নয়ছয় হয়েছে।’ মা ক্যান্টিনের টাকা কোথা থেকে আসছে বলেও প্রশ্ন তোলেন তিনি। এপ্রসঙ্গে রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনিক আধিকারিকদের ‘মোমের পুতু’ল তকমা দিয়ে রাজ্যপালের অভিযোগ, ‘মা ক্যান্টিনের টাকা কোথা থেকে আসছে জানতে মুখ্য সচিব, ডিজি-কে তলব করেছিলাম। কিন্তু তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া কোনও কথা বলে না।’ একইসঙ্গে কলকাতা পুরভোটে রিগিংয়ের অভিযোগ তুলে কলকাতা পুলিশ, প্রশাসন থেকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকেও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের মতো কাজ করছে এবং গণতন্ত্র বিনষ্ট হচ্ছে বলেও তোপ দাগেন ধনখড়। আবার হাওড়া ও বালি পুরসভা বিলে তিনি স্বাক্ষর করেননি এবং সেটি এখনও বিবেচনাধীন রয়েছে বলেও এদিন ফের দাবি জানিয়েছেন রাজ্যপাল।
Be the first to comment