আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আবারও চিঠি দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। মঙ্গলবার দিল্লি যাওয়ার পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি কড়া চিঠি দিলেন রাজ্যপাল। ভোটের পর রাজ্যে ঘটে চলা একাধিক হিংসার ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে একে ‘স্বাধীন ভারতে ঘটা সবচেয়ে খারাপ ঘটনা’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন রাজ্যপাল। হিংসা ও সন্ত্রাসের আবহেও কেন মুখ্যমন্ত্রী নীরব? কেন তাঁর মন্ত্রীসভার বৈঠকে এই নিয়ে কোনও আলোচনা হল না? নারদকাণ্ডে অভিযুক্তদের পাশে দাঁড়াতে কেনই বা নিজাম প্যালেসে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এমন একাধিক প্রশ্ন তুলে মমতাকে চিঠি দিয়েছেন ধনখড়।
দু’পাতার এই চিঠিতে ধনখড় লিখেছেন, “আমি লক্ষ্য করেছি আপনি ভোট-পরবর্তী হিংসা নিয়ে ক্রমাগত নীরব রয়েছেন। হিংসাজনিত ঘটনায় রক্তপাত ঘটেছে, মানুষের অধিকার খর্ব হয়েছে, মহিলাদের সম্মানহানী হয়েছে, বহু সম্পত্তি নষ্ট হয়েছে। মূলত বিরোধী পক্ষের সঙ্গেই এটা হয়েছে। যা স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের গণতন্ত্রে ঘটা এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে খারাপ ঘটনা।”
মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে রাজ্যপালের নিজের চিঠিতে আরও উল্লেখ করেছেন, “আমি বারবার আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছি, কিন্তু আপনি নীরব থেকেছেন। এমনকী, মন্ত্রিসভার বৈঠকেও আপনি এই বিষয়ে কোনও আলোচনাই করেননি। পুলিশ, প্রশাসন এরকম একটি পরিস্থিতিতে তাদের দায়িত্ব পালন করবে এটাই কাম্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেটা হয়নি। উপরন্তু, পীড়িত মানুষরা ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের ভয়ে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। তাঁদের আঘাত করা হচ্ছে, যেহেতু তারা বিরোধী দলের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।”
এছাড়াও চিঠির শেষে রাজ্যপাল রাজ্যের পরিস্থিতিকে ‘মৃত গণতন্ত্রের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি লিখেছেন, “১৩ থেকে ১৫ মে আমি ভোট পরবর্তী হিংসায় ক্ষতিগ্রস্ত জায়গাগুলিতে গিয়েছি এবং মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি। কোচবিহার, নন্দীগ্রাম এবং অসমের রংগোপালী ক্যাম্পে গিয়েছি। আপনি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আমার সঙ্গে সহমত হবেন, এই ধরনের পরিস্থিতি মৃত গণতন্ত্রের মতো শোনায়।”
Be the first to comment