আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় ইস্যুতে চরমে পৌঁছেছে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত। সোমবার কেন্দ্রের তলবে দিল্লি না গিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব পদ থেকেই অবসর নিয়েছেন আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার মাঝে বরাবরের মতো ট্যুইটারে ফের সরব রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। কলাইকুণ্ডা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক পরিকল্পনা করেই বয়কট করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিব, ট্যুইট করে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন রাজ্যপাল।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’-এর ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে কলাইকুণ্ডা বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু সেই বৈঠকে যোগ দেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিছুক্ষনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তার হাতে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিব। তার পরেই মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে কাজে যোগ দেওয়ার জন্য ডেকে পাঠায় কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মিবর্গ ও প্রশিক্ষণ মন্ত্রক। মুখ্যসচিবকে নিয়ে শুরু হয় রাজ্য-কেন্দ্র দড়ি টানাটানি। তার মধ্যে আবার সোমবার রাতে ট্যুইট করে বোমা ফাটালেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।
ট্যুইটে তিনি লেখেন, “গত ২৭ মে রাত ১১টা ১৬ মিনিটে আমাকে মেসেজ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। লিখেছিলেন, ‘আপনার সঙ্গে কথা বলতে পারি? জরুরী।’ তারপর ফোন করে তিনি বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে যদি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী উপস্থিত থাকেন তাহলে তিনি সেই বৈঠক বয়কট করবেন।” রাজ্যপালের এই ট্যুইট ঘিরে ফের উত্তাল হয়েছে রাজ্য রাজনীতি।
কলাইকুণ্ডার বৈঠক নিয়ে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করেন রাজ্যপাল। ট্যুইটে তার দাবি, “পরিকল্পনা করেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক বয়কট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ও মুখ্যসচিব। তারপর এই বৈঠক নিয়ে অসত্য কথা বলে বেড়াচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। এই পদক্ষেপ সম্পূর্ণ অগনতান্ত্রিক ও অসাংবিধানিক। এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার পরিপন্থী। ২৮ মে দেশের দীর্ঘ ইতিহাসে কালো দিবস হিসেবে লেখা থাকবে।”
এমনকী স্বরাষ্ট্রসচিবের বিষয়ে কেন্দ্র-রাজ্য তরজা নিয়েও সরব হয়েছেন সৌগত রায়। তিনি বলেন, “অবসরের পরেও আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দেওয়া কেন্দ্রের প্রতিহিংসামূলক আচরণ। একজন যোগ্য ব্যক্তিকে অপমান করা। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে যোগ্য সম্মান দিয়েছেন। আলাপন বন্দোপাধ্যায় আর কেন্দ্রের অধীনে নেই। তিনি অবসর নিয়েছেন।”
টুইট প্রসঙ্গে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ”রাজ্যপাল কবে থেকে মানুষের মন পড়তে শিখলেন তো জানা নেই। উনি তো সাইকোলজিস্ট হয়ে গিয়েছেন। নরেন্দ্র মোদী ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে দিয়েছেন। সে কারণে ২৮ মে সবদিক থেকে ‘কালো দিন’। কবে থেকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা রাজ্য সরকারের অংশ হলেন যে প্রশাসনিক বৈঠকে আসবেন? ভারতবর্ষ এত বড় অপদার্থ প্রধানমন্ত্রী কখনও দেখেনি, তাই কালোদিন তো প্রতিদিন। জগদীপ ধনখড়ের নিজস্বতা নেই। উনি তল্পিবাহক হয়ে গিয়েছেন। জীবনের শেষপ্রান্তে দাঁড়িয়ে শিড়দাঁড়া একটু সোজা করুন।”
Be the first to comment