বিশেষ প্রতিনিধি,
ঘরে ঘরে আজ ভুরিভোজ৷ এই আগুনে বাজারে হাত ঠেকানো দায় মাছ, মাংসে। ফলের বাজারও আগুন। জামাইষষ্ঠীতে বাজার করতে গিয়ে চূড়ান্ত নাকাল মধ্যবিত্ত। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই বেড়েছে জিনিসপত্রের দাম।
তবে পদ সাবেকি হোক বা না হোক, বাজারে গিয়ে রীতিমতো নাজেহাল হতে হচ্ছে। বাঙালির বেশির ভাগ রান্নাতেই প্রধান উপকরণ আলু। এখন বিভিন্ন বাজারে চন্দ্রমুখী আলু ২২ থেকে ২৪ টাকা কেজি, জ্যোতি আলু ১৮ থেকে ২০ টাকা। পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। এ ছাড়া অধিকাংশ সবজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা। লাউ বড় একপিস ২০ টাকা। করলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা। লঙ্কা ১০০ টাকা কেজি। সবজির পাশাপাশি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম ৬০০ টাকা। এক কেজি ইলিশের দাম ১০০০ থেকে শুরু করে ১২০০ টাকা পর্যন্ত উঠছে। তবে এ বছর জামাইষষ্ঠীতে ইলিশের আকাল অনেক জায়গাতেই। সমুদ্রে ঝোড়ো বাতাসের কারণে মাছ ধরতে পারছেন না মৎস্যজীবীরা। কাজেই ভরসা এখন হিমঘরের ইলিশেই। ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজি গলদা চিংড়ি। বাগদা ৬০০ টাকা কেজি। এ ছাড়া ১ কেজির রুই ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা আর কাতলা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা। ভেটকি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি। এ ছাড়া আড়, পাবদা, ট্যাংরা, তোপসের কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। মাছের সাইজ বড় হলে তার দাম আরও চড়ছে। খাসির মাংস এক কেজি ৫৫০ থেকে ৫৬০ টাকা, মুরগির মাংস ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা। জামাইষষ্ঠী উপলক্ষে বেড়েছে ফলের দামও। এখন ল্যাংড়া আম উঠেছে। বাঙালির এই পার্বণে ল্যাংড়া আম ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। এ ছাড়া হিমসাগর ৬০ থেকে ৭০ টাকা। রয়েছে আম্রপালীও। লিচু ১৫০ টাকা কেজি, খুব ভাল মানের হলে কোথাও কোথাও ২৫০ টাকাও ছাড়াচ্ছে। বড় সাইজের জামরুল ২০০ টাকা কেজি। কালোজাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি। ১ কেজি আপেল ১০০ থেকে ১২০ টাকা।
প্রথাগত ‘জামাইষষ্ঠী’ লেখা সন্দেশের পাশাপাশি এখন তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন দেশের পতাকা আঁকা বিশ্বকাপ স্পেশাল সন্দেশ। নকুড়ের আমবাটি, আম্রপালী, আমমৌসুমির চাহিদা এই আমের মরশুমে বেশি। এ ছাড়া বাটারস্কচ, শিঙাড়া সন্দেশও পছন্দ করেছেন জামাইরা।
সকাল আটটার পর যে আর পথেঘাটে বেরোন যাচ্ছে না৷ আবহাওয়া দফতরও শুনিয়ে রেখেছেন, লু বইবে দিনভর৷ তাপমাত্রা বেড়ে কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা ঠাওর করতে পারছে না হাওয়া অফিসও৷
একদিকে চিড়বিড়ে গরম, অন্যদিকে মহার্ঘ্য মাছ, মাংস, ফল, সবজি৷ এই দুই বাজার গরম করা খবরের মধ্যেই মঙ্গলবার জামাইষষ্ঠীর আয়োজন বাঙালির ঘরে ঘরে৷ তারই মধ্যে কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলাতে তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে৷ ৪১ ডিগ্রি ছুঁয়েছে ইতিমধ্যেই৷ সঙ্গে গরম হাওয়ার হল্কা৷ নাক, মুখ ঢেকেও রক্ষা মিলছে না! আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, গত কয়েকদিনের মধ্যে মঙ্গলবার রেকর্ড তাপমাত্রা ছুঁতে পারে গরম৷ কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গেই চলবে তাপপ্রবাহ৷ বাড়বে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ৷ যার জেরে চরম অস্বস্তি বাড়বে৷ মনে করা হচ্ছে এ বছর যে গরম পড়তে চলেছে তা গত দশ বছরেও পড়েনি৷
Be the first to comment