কোভিড-১৯ মোকাবিলায় জাপানে টানা এক মাসের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী শিনঝো আবে। তবে গোটা দেশে নয়, রাজধানী টোকিও-সহ দেশের ছয় অংশে এই জরুরি অবস্থা জারি থাকবে বলে জানিয়েছে আবে প্রশাসন। এদিন আবে বলেন, “দেশের যে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে তাতে মানুষের জীবন ও অর্থনীতি বিপদের মুখে। এর জন্যই আমি জরুরি অবস্থা ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
জাপানে এদিন আবে যে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন সেটা আগেই জানা গিয়েছিল। জল্পনা ছিল, টানা ছ’মাসের জরুরি অবস্থা জারি হতে পারে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এক মাসের জন্য মানুষের গিতিবিধি নিয়ন্ত্রিত করল জাপান সরকার। যে সব এলাকা জরুরি অবস্থার অধীনে সেখানে মানুষকে বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। বন্ধ থাকবে অফিস, দোকান সব কিছুই।
বিভিন্ন জাপানি সংবাদমাধ্যম আগেই জানিয়েছিল, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আজকালের মধ্যেই জাপানে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। সরকারি সূত্র উল্লেখ করে জাপান টাইমস সোমবারই জানায়, রাজধানী টোকিও ও অন্যান্য প্রধান শহরে কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা টানা বেড়ে চলায় জরুরি অবস্থা ঘোষণার কথা ভাবছেন প্রধানমন্ত্রী। মঙ্গলবার এই ঘোষণা করা হতে পারে। সেই জল্পনা সত্যি করে এদিন এক মাসের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী আবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে অনেক ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও জাপানে দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। স্থানীয় সংবাদপত্রের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, শুধু টোকিওতেই আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার।
এখনও পর্যন্ত জাপানে করোনা আক্রান্ত হয়ে ৮৫ জন মারা গেছেন। আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন হাজার। বিশ্বের সর্বাধিক জনবহুল শহর টোকিওতে দ্রুতগতিতে সংক্রমণ বাড়ায় আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। জাপান সরকার করোনা মোকাবিলার জন্য যে টাস্কফোর্স গঠন করেছে সোমবার বিকেলে সেই কমিটি বৈঠকে বসে। এর পরেই জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়।
টোকিওর গভর্নর অবশ্য তার আগেই শহরের বাসিন্দাদের ঘরে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। প্রয়োজন ছাড়া যাতে ঘরের বাইরে কেউ না যান, সে বিষয়ে সতর্ক করেন তিনি। টোকিওতে এই বছরেই অলিম্পিক গেমস আয়োজনের কথা ছিল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তা বাতিল হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করার ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী আবের হাতে ছিল না। এ জন্যে গত মার্চ মাসেই আইন সংশোধন করা হয় জাপানে। নতুন আইনে বলা হয়েছে, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে করোনা মোকাবিলায় আবে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারেন। সেই আইনের মাধ্যমেই এদিন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেন আবে।
Be the first to comment