‘মাননীয়া কুশলী নেত্রী’, তৃণমূলের ‘বহিরাগত’ তত্ত্বে সিলমোহর দিয়ে মমতার প্রশংসায় জয়প্রকাশ

Spread the love

বরখাস্ত হওয়ার ২৪ ঘন্টাও কাটল না, বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন জয়প্রকাশ মজুমদার ও রীতেশ তিওয়ারি। সাফ জানালেন, এই রাজ্যের প্রকৃত বিজেপি নেতাদের বাদ দিয়ে বাইরে থেকে লোকরা এসেই বিজেপিকে ডুবিয়েছে। যা আদতে একুশের ভোটপর্বে পদ্ম শিবিরকে নিশানা করতে তৃণমূলের ‘বহিরাগত’ তত্ত্বকেই মান্যতা দিল বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি বিরোধী দল হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূলের আন্দোলনেরও প্রশংসা করেন বিজেপির এই ‘বরখাস্ত’ নেতা।

মঙ্গলবার প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেছেন, ‘২ থেকে ১৮টি লোকসভা আসন জিততে যেসব নেতার অবদান ছিল তাঁদের ক্রমেই অবজ্ঞা করা হল। বদলে বাংলার বাইরে থেকে লোকজন আসা শুরু হয়। যাঁদের তৃণমূল বলেছিল বহিরাগত। সঙ্গে অন্য দল থেকে ভাঙিয়েও নেতা আনা হল। যার পরিণতি একুশের ভোটে পরাজয়।’

বিরোধী দল হিসাবে আন্দোলনের পরিবর্তে আদালতের লড়াইতেই বেশি ভরসা বর্তমান রাজ্য বজেপির। তৃণমূলের এই অভইযোগেও মেনে নিয়েছেন জয়প্রকাশবাবু। এ নিয়ে বলতে গিয়েই এদিন জয়প্রকাশ মজুমদারের মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা শোনা গিয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘বিরোধী রাজনীতি কীভাবে করতে হয় তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে শেখা উচিত। এখন বিজেপির আন্দোলন আদালত কেন্দ্রীক। ২০০৮-৯ সালে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বামপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তখন তা ছিল মাঠে ময়দানে। তিনি আদালতের মুখাপেক্ষী হয়ে বসে থাকেননি।’

এপ্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বর্তমান রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও দলের সাধারণ সম্পদক (সংগঠন) অমিতাভ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন গেরুয়া শিবিরের রাজ্য কমিটির প্রাক্তন সহসভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার। তাঁর কথায়, ‘সুকান্ত মজুমদারের রাজনীতির অভিজ্ঞতা আড়াই বছরের। দলের সাধারণ সম্পদক (সংগঠন) রাজনীতি করছে মাত্র ২ বছর। এঁদের বিপক্ষে রয়েছেন মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যাঁকে আজ দেশব্যাপী বিরোধী রাজনীতির মুখ বলা হচ্ছে। পছন্দ না হলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিকভাবে একজন অতি কুশলী নেত্রী। তিন দিন খেলে মেসির দলের বিরুদ্ধে লড়া যেমন যায় না, এক্ষেত্রেও ঠিক তাই হয়েছে।’

একুশের ভোটে হারের কেন কোনও দলীয় পর্যালোচনা হয়নি? তা নিয়েই এদিন প্রকাশ্যে প্রশ্ন তোলেন জয়প্রকাশ মজুমদার। তাঁর অভিযোগ, ‘ভার্চুয়াল বৈঠকে কেউ কিছু বলতে গেলে, প্রশ্ন করলেই তাঁর মাইক বন্ধ করে হত। দোষ-ত্রুটি ঢাকার কোনও দিকনির্দেশ ছিল না। আসলে চাদর চাপা দিয়ে রোগ সারানো সম্ভব নয়।’

বরখাস্ত জয়প্রকাশের হুঁশিয়ারি, ‘কর্মীরা ভালো নেই। এর মধ্যেই আমাদের শাস্তি দিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা চলছে। আসলে বর্তমানে দলের নেতারা শান্তনু ঠাকুরের নেতৃত্বে মতুয়াদের আন্দোলন নিয়ে ভয় রেয়েছেন। যেসব কর্মী তৃণমূলের অত্যাচার সহ্য করে গেরুয়া ঝান্ডা ধরেছেন তাঁরা কাচের ঘরে বসা নেতাদের ভয় পাবে এটা ভাবা অলীক স্বপ্ন।’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*