রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুর এবার জয়প্রকাশ মজুমদারের গলাতেও। সদ্য জার্সি বদলের পর থেকেই পুরানো দলের বিরুদ্ধে একের পর এক ঝাঁঝালো আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছেন তিনি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নাকি তাঁকে বলেছিলেন, নন্দীগ্রামে জিততে অনেক কায়দা করতে হয়েছে। শনিবার এমনটাই দাবি করলেন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া জয়প্রকাশ মজুমদার। রাজীবের পথে হেঁটেই এবার নন্দীগ্রামের ভোট প্রসঙ্গে নতুন করে বোমা ফাটালেন তিনিও।
শনিবার জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, ২০২১ সালের ২ মে বিকেল পাঁচটার সময় বিজেপির হেস্টিংসের রাজ্য দফতর থেকে নির্বাচনের ফলাফলের উপরে আমিই সাংবাদিক বৈঠক করেছিলাম। আমি বলেছিলাম, নন্দীগ্রামে মাননীয়া জিতেছেন, তাঁকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমাদের শুভেন্দু অধিকারী হেরে গিয়েছেন কারণ, বিকেল পাঁচটায় সেই খবরই ছিল। যখন ফলাফল উল্টে যায়, তার পরবর্তী ক্ষেত্রে আমি শুভেন্দু বাবুকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আমরা খবর পেলাম, সাংবাদিক বৈঠক করে বললাম, আপনি হেরে গিয়েছেন, তারপর আপনি জিতে গেলেন। সেই সময় উনি এক রহস্যময় হাসি হেসে আমাকে বলেছিলেন, জয়প্রকাশ দা অনেক কায়দা করতে হয়েছে।”
যদিও জয়প্রকাশ মজুমদারের দাবিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি নেতৃত্ব। দল বদলের পরপর এই ধরনের মন্তব্যকে কটাক্ষ করে শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, “সবে তো মাঠে নেমেছেন, একটু স্টেডি হোন। আগে পুরোপুরি তৃণমূলী হয়ে যান। কংগ্রেস থেকে বিজেপি হতে সময় লেগেছে। এবার বিজেপি থেকে তৃণমূল হতে তো একটু সময় লাগবে। আগে ধাতস্থ হোন, ওদের মতো করে সব ঠিকঠাক করে নিন। আগে ঘর গুছিয়ে নিন, তারপর উনি বলবেন।”
উল্লেখ্য, গত বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগণনার দিন নন্দীগ্রামকে কেন্দ্র করে এক চূড়ান্ত নাটকীয়তা দেখা গিয়েছিল। প্রথমে সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে জানা গিয়েছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতে গিয়েছেন নন্দীগ্রামে, পরাস্ত হয়েছেন শুভেন্দু। কিন্তু তার কিছু সময় পরেই পুরো চিত্রটাই উল্টে যায়। দেখা যায়, নন্দীগ্রামে মমতাকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। আর এই নিয়ে সেই দিন থেকেই সরব রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। বিষয়টি নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ পর্যন্ত হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব।
তৃণমূলের দাবি, নন্দীগ্রামের গণনায় কারচুপি করা হয়েছে। যদিও, সেই দাবি মানতে নারাজ রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও গোটা বিষয়টি এখনও আদালতের বিচারাধীন। তবে প্রথমে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তারপর জয়প্রকাশ মজুমদার – দুই বিজেপি ত্যাগী নেতার এ হেন মন্তব্যে, স্বাভাবিকভাবে কিছুটা অস্বস্তি বাড়াচ্ছে গেরুয়া শিবিরের।
Be the first to comment