সামনের বছর ভোট উত্তরপ্রদেশে, আর তার আগেই শুরু হয়ে গেল দলবদলের খেলা। বুধবার প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা জিতিন প্রসাদ যোগ দিলেন বিজেপিতে। রাজধানী দিল্লিতে, কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলের হাত ধরে জিতিন প্রসাদ বিজেপির প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ করেন। উল্লেখ্য, মনমোহন সিং সরকারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও ছিলেন জিতিন প্রসাদ। ২০০১ সালে তিনি কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন আর ২০০৪ সালে তিনি প্রথমবার নির্বাচনে জিতে সংসদে পৌঁছেছিলেন।
দীর্ঘ ২০ বছর ধরে কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত জীতিন এ দিন বিজেপিতে যোগ দিয়ে বলেন, “কংগ্রেসের সঙ্গে আমার পরিবারের তিন প্রজন্মের সম্পর্ক। বহু চিন্তাভাবনার পরই আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিগত ৮-১০ বছর ধরেই আমার মনে হয়েছে যে যদি সত্যিই কোনও জাতীয় দল থাকে, তবে তা বিজেপি। বাকি রাজনৈতিক দলগুলি আঞ্চলিক রাজনীতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ।” প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে তিনি বলেন, “দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে একমাত্র প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বিজেপিই উঠে দাঁড়িয়েছে।”
প্রসঙ্গত, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনের সময়ও জিতিন প্রসাদের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার জল্পনা তৈরি হয়েছিল। যদিও, তখন তিনি সমস্তরকম জল্পনায় জল ঢেলে জানিয়েছিলেন, তাঁর ঘর কংগ্রেসই। সেই ‘ঘর’ ছেড়ে দিলেন তিনি। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ নির্বাচনে জিতিন প্রসাদকে প্রদেশ কংগ্রেসের পর্যবেক্ষক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু এ রাজ্যের ভোটে একটিও আসন পায়নি কংগ্রেস।
তবে, তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, প্রয়াত কংগ্রেস নেতা জিতেন্দ্র প্রসাদের পুত্র জিতিন। ছোটবেলা থেকেই কংগ্রেস ঘরানার রাজনীতি করেই বেড়ে উঠেছেন জিতিন। আর উত্তরপ্রদেশের রাজনীতিতে প্রভাব রয়েছে এই প্রসাদ পরিবারের। বিশেষত ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়ের মধ্যে জিতিন প্রসাদদের জনপ্রিয়তাও রয়েছে। তাই আগামী বছর উত্তরপ্রদেশের ভোটের আগে জিতিনের দলছাড়ার ঘটনা কংগ্রেস নেতৃত্বের কাছে নিঃসন্দেহে জোর ধাক্কা।
কংগ্রেসের মধ্যে বিক্ষুব্ধ জি-২৩ গোষ্ঠীর অন্যতম সদস্য বলেই পরিচিত ছিলেন উত্তরপ্রদেশের এই নেতা। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি করা হয় অজয়কুমার লাল্লু। আর তার পরেই লাল্লুর সঙ্গে তীব্র সংঘাত শুরু হয় জিতিনের। সূত্রের খবর, লাল্লুর কাজকর্ম নিয়ে বারবার কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্গা গান্ধীর কাছে অভিযোগ করেছিলেন তিনি। কিন্তু তাঁর একাধিক আপত্তির কথা জানালেও, তাতে কর্ণপাত করা হয়নি বলেই ঘনিষ্ঠমহলে অভিযোগ করেছিলেন জিতিন। তাই বাধ্য হয়েই দলত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। এমনই বলছে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল।
Be the first to comment