দু’হাত প্রসারিত। বিটসের তালে তালে দুলছে মাথা। কখনও লাফিয়ে, কখনও দেহকে অদ্ভুত মোচড় দিয়ে গানের তালে তালে নেচে চলেছেন র্যাপার। নাচের মাঝেই নানা স্টান্ট। উল্লাসে ফেটে পড়ছেন মুগ্ধ শ্রোতারা। জন জেমসের শো মানে এটাই চেনা দৃশ্য। প্লেন থেকে লাফিয়ে প্যারাগ্লাইড করতে করতেও গান গাইতে দেখা গেছে তাঁকে। তবে এ বারের স্টান্টে সামান্য অসতর্ক হয়ে পড়েছিলেন গায়ক। তাতেই ঘনিয়ে এন নির্মম মৃত্যু।
ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ভার্ননে গত শনিবার একটি ভিডিও শ্যুট করতে গিয়ে এয়ারক্রাফ্টের উইং থেকে পড়ে মৃত্যু হয় জন জেমসের। সেসনা এয়ারক্রাফ্টে চেপে অনেকটা উপরে উড়তে উড়তে গান গাইছিলেন জন। তার মাঝেই চমকে দেওয়ার মতো নানা স্টান্ট। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, র্যাপের তালে তালে নাচতে নাচতে এয়ারক্রাফ্টের উইংয়ের অনেকটা ধারে চলে গেছিলেন তিনি। ক্ষণিকের অসতর্কতা। তার পরই পা পিছলে সটান নীচে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু। গোটা ব্যাপারটা এতই আকস্মিক ছিল যে প্যারাশ্যুট খোলার সময়েও পাননি গায়ক।
জন জেমসের মৃত্যুর খবর শনিবার সন্ধেয় ঘোষণা করেন রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেন পুলিশ। মঙ্গলবার সেই খবর বার হয় কলম্বিয়ার সমস্ত সংবাদ মাধ্যমে। মিউজিক অ্যালবামের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নতুন একটি ভিডিও লঞ্চ করার কথা ছিল জনের। প্রতিবারই তাঁর ভিডিওতে নতুন কিছু চমক থাকে। এ বারও অন্য রকম কিছু করার চেষ্টা করছিলেন গায়ক। জন যখন উইং থেকে পড়ছিলেন তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন এয়ারক্রাফ্টের পাইলট। কিন্তু, শেষপর্যন্ত সেটা সম্ভব হয়নি।
জন জেমস ম্যাকমুরে। কানাডার বাসিন্দা। একাধারে র্যাপার, ছবি নির্মাতা, স্টান্ট আর্টিস্ট, ফ্রিস্কায়ার। জন জেমস নামেই র্যাপ মিউজিকের জগতে তিনি অধিক পরিচিত। লস অ্যাঞ্জেলেস, ক্যালিফোর্নিয়া, মার্কিন মুলুকের নানা জায়গা ঘুরে শো করেন জন। তাঁর ভক্তের সংখ্যা অগণিত। বেশিরভাগই তাঁর স্টান্টের ফ্যান। এর আগেও ফ্রাস্কাইং করতে গিয়ে সাত বার ছোটবড় দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিলেন জন। আঘাতও হয়েছিল মারাত্মক। জনের সহকর্মীরাই জানিয়েছেন, তাঁর মনোবল ছিল অসীম। যে কোনও আঘাতের পরই ফের নতুন উদ্যোমে কাজ শুরু করতেন তিনি। কোনও কিছুতেই তাঁকে দমিয়ে রাখা যেত না। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে তাঁর অগণিত ভক্তদের মধ্যে। ফেসবুক, টুইটারে পোস্ট করে শোক প্রকাশ করছেন অনেকেই।
Be the first to comment