দু’মাস আগের স্মৃতি এখনও তাজা। এরইমধ্যে ফের একবার জোশীমঠেই হিমবাহ ভেঙে পড়ল। শনিবার সকালে উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠে ভারত-চিন সীমান্তের কাছে নীতি ভ্যালিতে একটি হিমবাহ ভেঙে পড়ে। ইতিমধ্যেই উদ্ধারকার্য শুরু করেছে সেনাবাহিনীর জওয়ানরা। বেলা ১১টা নাগাদ জানানো হয়, এখনও অবধি মোট ৩৮৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। আটটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজদের উদ্ধারে তল্লাশি অভিযান চললেও ভারী বৃষ্টিপাত ও ধসের কারণে কাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি সপ্তাহের সোমার থেকেই জোশীমঠের ওই অঞ্চলে ভারী বৃষ্টি ও তুষারপাত হচ্ছিল। শুক্রবার বিকেল চারটে নাগাদ আচমকাই একটি হিমবাহে ধস নামে। সুমনার কাছে নীতি ভ্যালিতে আছড়ে পড়ে। ওই অঞ্চলেই বর্ডার রোড অর্গানাইজেশনের অধীনে রাস্তা তৈরির কাজ চলছিল। মোট দুটি ক্যাম্পে থাকছিল শ্রমিকেরা। বরফের ধসে নিখোঁজ হয়ে যান। গতকাল বিকেলে কিছুক্ষণের জন্য উদ্ধারকার্য শুরু হলেও তা খারাপ আবহাওয়ার কারণে বন্ধ হয়ে যায়। এ দিন সকাল থেকে পুরোদমে উদ্ধারকার্য শুরু হয়। জানা গিয়েছে, একাধিক জায়গায় ধস নামার কারণে ৪-৫টি অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।
সকালে উদ্ধারকার্য শুরু হওয়ার পরে জানানো হয়, বরফের নীচে আটকে পড়া ২৯১ জন শ্রমিককে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার হয়েছিল দুটি মৃতদেহও। বেলা গড়াতেই জানা যায়, মোট ৩৮৪জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের চিকিৎসা চলছে। মৃতের সংখ্যাও বেড়ে আটে পৌঁছেছে।
ইতিমধ্যেই উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী তিরথ সিং রাওয়াত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে গোটা বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “নীতি ভ্যালির সুমনায় হিমবাহে ধস নেমে যে বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে, সেই বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। তিনি সম্পূর্ণ সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। আইটিবিপির জওয়ানদেরও প্রস্তুত থাকতে বলেছেন।” উদ্ধারকারী দল ও বায়ুসেনাকেও উদ্ধারকার্যে সাহায্যের জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারিও এই জোশীমঠেই হিমবাহ ভেঙে পড়ে বিপর্যয় নেমে আসে। হড়পা বানে ভেসে যায় চামোলি গ্রাম। নয়না দেবী জাতীয় উদ্যানের কাছে অবস্থিত ঋষিগঙ্গা ও তপোবন বিদ্যুৎ প্রকল্পও সম্পূর্ণরূপে ধুয়ে মুছে যায়। টানা এক সপ্তাহ উদ্ধারকার্য চালিয়ে মোট ৭৪টি দেহ উদ্ধার করা হয়। নিখোঁজ ১৩৫ জনকেও পরবর্তী সময়ে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
Be the first to comment