রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নতুন গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের ইতিহাসে এমএ ডিগ্রি নিয়ে টিকা টিপ্পনি, খোঁচা চলছিলই নেটিজেনদের মধ্যে। তার মধ্যেই বোমা ফাটালেন মোদীর অতি ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত বিজেপি নেতা জয় নারায়ণ ব্যাস। গুজরাতের ওই বিজেপি নেতা পরপর টুইটে শক্তিকান্তের ডিগ্রি ও যোগ্যতা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন।
এতে যেমন অস্বস্তিতে বিজেপি, তেমনই বিভ্রান্ত রাজনৈতিক মহলও। কেউ কেউ প্রশ্ন করেছেন, ব্যাস কি বিজেপি ছেড়ে দিয়েছেন? তাতে অবশ্য দমে যাননি ব্যাস। বলেছেন, তিনি বিজেপিতেই আছেন। মোদী গুজরাতে মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়ে তাঁর ক্যাবিনেটে ছিলেন ব্যাস।
একটি টিভি চ্যানেলকে ব্যাস বলেছেন, তিনি শুধু নতুন গভর্নরকে অভিনন্দন জানাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, আরবিআই গভর্নর পদে কাজ করতে হলে আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া অর্থনীতি ভালো করে জানতে হয়। এ-ও বলেন, আইএএস অফিসারদের তিনি শ্রদ্ধা করেন। কিন্তু শক্তিমানের পূর্বসূরিদের যে ভাবে আন্তর্জাতিক মহলে গ্রহণযোগ্যতা ছিল, তা এ ক্ষেত্রে নেই।
শক্তিকান্ত দাস- এম এ (ইতিহাস)। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা রকমের জোক, মিম আগেই শুরু হয়ে গেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নতুন গভর্নরকে নিয়ে। কেন ? কারণ নেটিজেনদের মতে, রঘুরাম রাজন ও উর্জিত পটেলের পরে আরবিআই গভর্নর পদে যোগ্যতার নিরিখে শক্তিকান্ত দাস সমমর্যাদার নন। এই নিয়ে টুইটারে রীতিমতো আলোচনা চলছে। এই নিয়োগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছেও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।
শক্তিকান্ত হলেন প্রাক্তন অর্থসচিব ও বর্তমানে তিনি অর্থ কমিশনের সদস্য। সোমবার উর্জিত পটেল অপ্রত্যাশিত ভাবেই আরবিআই পদ থেকে ইস্তফা দেন। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শক্তিকান্তকে ওই পদে বসান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়ে যায়। নেটিজেনদের বক্তব্য, শক্তিকান্তের শিক্ষাগত যোগ্যতা শুধুমাত্র ইতিহাসে এম এ। কিন্তু তাঁর আগের দুজন, রঘুরাম রাজন ও উর্জিত পটেল ছিলেন অর্থনীতিতে পিএইচডি।
দু বছর আগে মোদী সরকারের নোটবন্দির পরেই সরকারের হয়ে একাধিক সাংবাদিক সম্মেলন সামলেছেন শক্তিকান্ত। সেই সময়কার সাংবাদিক সম্মেলন বা প্রেস বিবৃতির ফুটেজ বার করে দেখছেন অনেকে। নোটবন্দির অভিজ্ঞতা যে হেতু সুখের নয়, সেই সময়কার শক্তিকান্তের বিবৃতি নিয়েও সমালোচনার সুরে টুইটার-বিতর্ক চলছে।
ফিনান্স বা ইকনমিকস-এ তাঁর কোনও ডিগ্রি না থাকলেও, শক্তিকান্ত দাসের উইকিপিডিয়া পেজ বলছে তিনি ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট বেঙ্গালুরু থেকে অ্যাডভান্সড ফিনানশিয়াল ম্যানেজমেন্টের কোর্স করেছেন। তাছাড়া ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কিং ও ইনস্টিটিউশনাল ক্রেডিট নিয়েও কোর্স করেছেন। কেন্দ্র ও রাজ্য দুই জায়গাতেই তিনি এমন সব পদে কাজ করেছেন যেখানে অথর্নীতি না জানলে তিনি কাজ করতে পারতেন না। তা ছাড়া, আরবিআই গভর্নর হতে গেলে ফিনান্স বা ইকনমিকস-এ ডিগ্রি লাগবেই তা-ও নয়। ফলে, ওই পদে তাঁর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে না।
শক্তিকান্তকে ওই পদে নিয়োগের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই নেটিজেনরা তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে গবেষণা শুরু করে দেন। শক্তিকান্ত ১৯৮০ সালের তামিলনাড়ু ক্যাডারের আইএএস। তিনি তামিলনাড়ু ও কেন্দ্রের একাধিক দায়িত্বপূর্ণ পদে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন।
Be the first to comment