আপাতত কাজে ফেরা, তবে আন্দোলন কে পাথেয় করে—স্বাস্থ্য ভবন থেকে সিজিও, হাইল্যান্ড পার্ক থেকে শ্যামবাজার অগণিত মানুষ রিলে মশাল মিছিলে

Spread the love

 

রোজদিন ডেস্ক:-

স্বাস্থ্য ভবনের সামনে ধর্না প্রত্যাহার করলেন জুনিয়র ডাক্তারেরা। শুক্রবার স্বাস্থ্য ভবন থেকে সিজিও কমপ্লেক্স পর্যন্ত মিছিল করেন তাঁরা। মিছিল শেষে ধর্না প্রত্যাহারের কথা জানান আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারেরা। সেই মিছিলে যোগ দিয়েছেন সাধারণ মানুষও। অন্য দিকে, প্রায় একই সময়ে আরজি কর-কাণ্ডে প্রতিবাদের শহরের অন্য প্রান্তে এক অভিনব মিছিল শুরু হয়। হাইল্যান্ড পার্ক থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত রিলে মশাল মিছিলেও পা মেলান সাধারণ মানুষ।

 

অবশেষে ৪২ দিন পর ধর্না প্রত্যাহারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। আগামীকাল শনিবার থেকেই তাঁরা জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত হবেন। নির্যাতিতার স্মৃতিতে আরজি করের সামনে বসানো হবে প্রতীকি মূর্তিও। একই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, ২৭ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তদন্তের অগ্রগতি ও প্রতিশ্রুতি পূরণ না হলে ফের কর্মবিরতিতে নামতে পারেন তাঁরা।
এদিন স্বাস্থ্য ভবন থেকে সিজিও কমপ্লেক্স পর্যন্ত প্রায় ৪ কিমি পথ হেঁটে দ্রুত বিচারের দাবিতে সিবিআইয়ের কার্যালয়ের সামনে স্লোগান তোলের আন্দোলনকারীরা। তাঁরা জানিয়ে দেন, আর পাঁচটা ঘটনার সঙ্গে এই ঘটনা গুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা যেন না হয়। দ্রুত অপরাধীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।


পরে সেখান থেকে আরজি করে ফিরে সাংবাদিক বৈঠক থেকে জুনিয়র চিকিৎসকরা জানান, মানুষের কথা ভেবে আগামীকাল শনিবার থেকে তাঁরা এমার্জেন্সি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত হবেন। তবে নজর রাখবেন সিবিআই তদন্তের গতিপ্রকৃতির দিকে। একই সঙ্গে রাজ্যের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণের দিকেও তাঁরা লক্ষ্য রাখছেন বলে জানান।


গত ৯ অগস্ট আরজি করের সেমিনার হল থেকে ডাক্তারি ছাত্রীর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। কর্মস্থলে খুন-ধর্ষণের প্রতিবাদে সেদিন থেকেই ধর্না অবস্থানে বসেছিলে্ন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এমনকী সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরও পরিস্থিতির বদল ঘটেনি। ধর্নাস্থলে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত সোমবার কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে বৈঠক হয়েছিল। সেখানে ডাক্তারদের দাবি মেনে একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। তবে কর্মবিরতি তোলার কথা থাকলেও তোলেননি ডাক্তাররা।
বরং প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে টাস্ক ফোর্স গঠন , সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত বাকি বিষয়গুলি পূরণের দাবিতে বুধবার সকালে ফের নবান্নে চিঠি দিয়েছিলেন আন্দোলনকারীরা। সেই দাবি মেনে বুধবার জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে নবান্নে বৈঠক করেন মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। হাসপাতালের সুরক্ষায় বৃহস্পতিবার নবান্নের তরফে স্বাস্থ্য দফতরের উদ্দেশে একটি বিশেষ নির্দেশিকাও জাারি করা হয়। যাতে আন্দোলনকারীদের বেশিরভাগ দাবি পূরণের কথা বলা হয়। এরপরই আন্দোলন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।
অন্যদিকে, শুক্রবার যখন স্বাস্থ্য ভবনের সামনে থেকে জুনিয়র ডাক্তারেরা মিছিল শুরু করেন, তখন হাইল্যান্ড পার্কে জমায়েত করেন সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষ। সেই জমায়েতে ছিলেন জুনিয়র ডাক্তার, ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহমেডান সমর্থক, বিভিন্ন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী, শিল্পী, তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী এবং নাগারিক সমাজ। বিকেল ৪টের পর হাইল্যান্ড পার্ক থেকে শুরু হয় মিছিল। দীর্ঘ ৪২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে হাইল্যান্ড পার্ক থেকে মশাল হাতে হাতে মিছিল পৌঁছবে শ্যামবাজারে। অভিনেত্রী উষসী চক্রবর্তী, রুপা ভট্টাচার্য, নাট্যব্যক্তিত্ব সৌরভ পালোধী-সহ অনেকেই পা মিলিয়েছেন শুক্রবারের এই কর্মসূচিতে। আছেন রিমঝিম সিংহেরাও। এই রিমঝিমের ডাকেই গত ১৪ অগস্ট ‘রাত দখল’ করেন মেয়েরা। শুক্রবার রাত ১২টা নাগাদ শ্যামবাজারে এই মিছিল শেষ হবে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*