তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে অগ্নিগর্ভ শাসনের খামার-নওবাদ গ্রাম ৷ দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে শনিবার রাতভোর চলে গুলি ও বোমাবাজি ৷ পুলিশের গাড়িতে ভাঙচুর করা হয় ৷ এই ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে বারুইপুর থানার পুলিশ ৷ এদিকে রবিবার সকাল থেকে থমথমে এলাকা ৷ চলছে পুলিশি টহল ৷ অভিযোগ, মতিয়ার সাপুই এবং সফিকুল ইসলাম নামে শাসক দলের দুই নেতার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলা দ্বন্দ্বের জেরেই এই সংঘর্ষ ৷ মতিয়ার হাড়োয়ার বিধায়ক হাজি নুরুল ইসলামের অনুগামী ৷ সফিকুল দেগঙ্গার বিধায়ক রহিমা মণ্ডলের ঘনিষ্ঠ ৷ মূলত এলাকার দখলদারি ও ভেড়ির টাকার ভাগ নিয়ে দুই নেতার মধ্যে গন্ডগোলের সূত্রপাত ৷ আর যার জেরেই শনিবার রাতে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয় ৷ রাতভর চলে বোমাবাজি ও গুলি ৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ ৷ পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করেও ছোড়া হয় বোমা, চালানো হয় ভাঙচুর ৷ গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ৷ বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে ৷
উল্লেখ্য, ক’দিন আগে হাজি নুরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দীর্ঘদিন ধরে চলা এই গন্ডগোল নিয়ে অভিযোগ করেন সফিকুল অনুগামীরা ৷ এদিকে,ঘটনার জেরে সকাল থেকেই থমথমে খামার-নওবাদ গ্রাম ৷ চলছে পুলিশি টহল ৷ পুলিশ পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে । ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।
এদিকে শাসনে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বলেন, এখন যে কোনও কারণে, যাই হোক, ঢিল পড়লেও তৃণমূলকে দোষ দেওয়া হচ্ছে । কারা দিচ্ছে? বিজেপি, সিপি আই (এম) ও কংগ্রেস। শনিবার থেকেই আমি শাসনের ঘটনার দিকে নজর রেখেছি। ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। তিনি আরও বলেন, বারাসত ২ নম্বর ব্লকের ৭টি পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের দখলে। আমাদের যেখানে সব পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি দখলে রয়েছে সেখানে আমরা লড়াই করতে যাব কেন?
বিরোধীদের দিকে অভিযোগ তুলে জ্যোতিপ্রিয় বলেন, এখন বিরোধীদের শাসনে ঢুকতে হবে। বিজেপির হাত ধরে সিপ আই(এম) ঢোকার চেষ্টা করছে। সেই জায়গায় যদি লড়াই হয় সেটা একটা ব্যাপার। ঝামেলা করে ঢোকার চেষ্টা করছে। আমাদের একটা লোকেরও এতে যোগ নেই। আমাদের শাসন নিয়ে লড়াই করারও দরকার নেই। এখন যদি বিজেপি ভেড়ির দখলদারি নিতে যায় সেখানে লড়াই হতে পারে। ভেড়ির টাকার একটা অংশ গরিব মানুষদের দেওয়া হয়। এখন বিজেপি যদি মনে করে গরির মানুষের সেই টাকার দখল নিতে হবে, তার জন্য শাসনে লড়াই হতে পারে। তার জন্য গ্রামবাসীরাই যথেষ্ট। আমাদের কিছু করতে হবে না।
পাশাপাশি এদিন শাসনের একদা বেতাজ বাদশা মজিদ মাস্টারের নাম উল্লেখ করে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, তাঁকে শাসন ছাড়া করা হয়েছে। অত্যাচারিত গ্রামবাসীরা তাঁকে শাসন থেকে বিতাড়িত করেছে। আমাদের দলের মধ্যে কোনও কোন্দল নেই। বিজেপি নতুন করে গল্প তৈরি করছে। ভালো গল্প না হলে বিষয়টাও জমে না। ওরা এখন শাসন নিয়ে সেটাই করছে।
Be the first to comment