এবার পুরভোটে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় অন্যতম চমক ছিল মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভ্রাতৃবধূর নাম। ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী হয়েছেন মমতার ভ্রাতৃবধূ কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরোদমে নিজের ওয়ার্ডে প্রচারও চালাচ্ছেন তিনি। ভোটের আগেই আদালতে মামলা হল সেই কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। নিজেকে সমাজকর্মী বলে পরিচয় দেওয়া কাজরী কী ভাবে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হলেন, সেই প্রশ্ন তুলেই জনস্বার্থ মামলা হয়েছে হাইকোর্টে।
আইনজীবী ইমতিয়াজ আহমেদ কাজরীর বিরুদ্ধে সেই মামলা করেছেন। কাজরীর সম্পত্তি কী ভাবে এত বাড়ল, তা কোনও সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করাতে হবে বলে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছেন তিনি।
কলকাতা পুর নিগমের ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায় নির্বাচন কমিশনে যে হলফনামা জমা দিয়েছেন, সেখানে দেখা গিয়েছে তাঁর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির আর্থিক পরিমাণ প্রায় ৩ কোটি ৮৬ লক্ষ ৮২ হাজার ৯৯৯ টাকা। কাজরীর দেওয়া হিসেব অনুয়ায়ী, তাঁর অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য ২ কোটি ৪৫ লক্ষ ৫৬ হাজার ৮৮৩ টাকা ও স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে ১ কোটি ৪১ লক্ষ ২৬ হাজার ১১৬ টাকাক। আর তাঁর স্বামী তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই কার্তিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৯৮ লক্ষ ২৪ হাজার টাকা। এ ছাড়া কালীঘাট সংলগ্ন এলাকা, ওড়িশা এবং বোলপুরে ৯ টি জমি তাঁর নামে রয়েছে বলে কমিশনে জানিয়েছেন কাজরী। একজন সমাজকর্মীর নামে কী ভাবে এত টাকা ও জমি থাকতে পারে, সেই প্রশ্ন তুলেই মামলা করা হয়েছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর সে ভাবে পরিবারের অন্য সদস্যদের সক্রিয় রাজনীতিতে দেখা যায়নি। পরে উত্থান হয়েছে ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। প্রথমে সাংসদ হিসেবে রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছেন তিনি। আর বর্তমানে তিনি দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। একুশের নির্বাচনে দলের প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। পরিবারতন্ত্রের নানা কথা বলে তৃণমূলকে বারবার বিঁধেছে বিজেপি নেতৃত্ব। এরই মধ্যে পুরভোটে আরও এক সদস্যের রাজনীতিতে পদার্পণ। মমতার ভ্রাতৃবধূকে খোদ মমতার নিজের ওয়ার্ডে প্রার্থী করায় কোন্দলও ছড়িয়েছে।
উল্লেখ্য, এই ৭৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তৃণমূলের টিকিটে তিন বার জিতেছেন রতন মালাকার। কিন্তু এবার রতন মালাকারকে টিকিট না দিয়ে কাজরীকে টিকিট দিয়েছে তৃণমূল। আর তাতেই বেজায় চটে যান রয়েছেন বিদায়ী কাউন্সিলর। মমতার ভ্রাতৃবধূ কাজরী বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে পুরভোটে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। শেষে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যস্থতায় তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।
Be the first to comment