ডাঃ কাকলি সারা বছর মানুষের পাশে থাকেন, তাই জয়ের হ্যাট্রিক হচ্ছেই

Spread the love

পিয়ালি আচার্য,

ছবি- প্রশান্ত দাস

ডা:কাকলি ঘোষ দস্তিদার। খ্যাতনামা চিকিৎসক। স্বামী ডাঃ সুদর্শন ঘোষদস্তিদার বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসায় শুধু রাজ্যে বা দেশে নয় সারা বিশ্বে এক উল্লেখযোগ্য নাম। দুই ছেলেও এখন ডাক্তার। অর্থ, খ্যাতি,যশ কোনও কিছুরই অভাব নেই।তবু ছাত্র আন্দোলন করা কাকলি আদর্শ হিসেবে অনুসরণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মমতা টীমের অনেক পুরনো সৈনিক। প্রথম থেকেই আছেন দিদির সঙ্গে। সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম তো বটেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধারাবাহিক গণআন্দোলনের বিশ্বস্ত সঙ্গী কাকলি। রাজনীতি তাঁর রক্তে। কাকা অরুণ মৈত্র  ছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। মামা গুরুদাস দাশগুপ্ত আবার বামপন্থী রাজনীতির এক উল্লেখযোগ্য নাম। বারাসাতের দিগবেড়িয়াতে কাকলির বাবা অজিত মৈত্র ও মা ইরা মৈত্র থাকতেন। সেখানেই তাঁদের ফার্ম হাউস। কাকলিও মুক্ত পরিবেশে গ্রামের সাধারন মানুষদের সঙ্গে ছোটবেলা থেকে বড় হয়ে ওঠেন।

পড়াশুনায় প্রথম থেকেই ভালো কাকলি, কৃতিত্বের সঙ্গে ডাক্তারি পাশ করেন। ১৯৮২ সালে তাঁর সঙ্গে বিয়ে হয় আরেক খ্যাতনামা ডাক্তার সুদর্শন ঘোষ দস্তিদারের। এই ডাক্তার দম্পতি শুধু ডাক্তারি করেই জীবন কাটিয়ে দিতে পারতেন। ডাক্তারি করা মানে অবশ্যই মানুষের জন্য করা কিন্তু আরও বৃহত্তর মানব সমাজের উন্নতিকল্পে সর্বোপরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মানুষের পাশে থাকার মানসিকতার শরিক হওয়ার জন্য রাজনীতিতে আসা এই দম্পতির। ছাত্র রাজনীতি করে বড় হয়ে ওঠা কাকলি কোনোদিনের জন্য দিদিকে ছাড়েন নি।

হাওড়া এবং ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে অল্পের জন্য হেরেছিলেন। হেরেছিলেন বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র থেকেও। তবুও হাল ছাড়েন নি। বিশ্বাস করতেন দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একদিন বাংলা তথা দেশের চালিকাশক্তি হবে। আর এই বিশ্বাস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আনুগত্য তাঁকে এনে দেয় সাফল্য। ২০০৯ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে তাঁর নিজের জায়গা বারাসাত লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন তিনি। ২০১৪-তেও ওই একই আসন থেকে আবার জয়ী হন। দুবারই ফরওয়ার্ড ব্লকের প্রার্থীদের পরাজিত করেন তিনি। এই বারাসাত লোকসভা কেন্দ্রটিতে ১৯৫৭ ও ১৯৬২ সালে জয়ী হয়েছিলেন কংগ্রেসের অরুণ চন্দ্র গুহ। ১৯৬৭ ও ১৯৭১ সিপিআইয়ের রনেন্দ্র নাথ সেন জয়ী হন এখান থেকে। ১৯৭৭ ও ১৯৮০ সালে ফরওয়ার্ড ব্লকের চিত্ত বসু জয়ী হন। ১৯৮৪তে কংগ্রেসের তরুণ কান্তি ঘোষ জয়ী হন। ১৯৮৯, ১৯৯১ ও ১৯৯৬-তে ফরওয়ার্ড ব্লকের চিত্ত বসু আবার এই আসন থেকে জয়ী হন। ১৯৯৮ সালে নবগঠিত তৃণমূল কংগ্রেস দল লোকসভা ভোটে যায়। এই বছর এই বারাসাত আসন থেকে প্রখ্যাত চিকিৎসক রঞ্জিত পাঁজা জয়ী হন। তারপরের বছর অর্থাৎ ১৯৯৯ সালেও এই আসন থেকে জিতে আসেন রঞ্জিত বাবু। ২০০৪ সালে আবার বামেদের হাতে আসে এই আসন। জয়ী হন ফরওয়ার্ড ব্লকের সুব্রত বসু। তারপর ২০০৯ এবং ২০১৪-তে পরপর জয়ী হন ডাক্তার কাকলি ঘোষ দস্তিদার। এই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রই উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলায়। মধ্যমগ্রাম, দেগঙ্গা, বারাসাত, অশোকনগর, হাবরা, বিধাননগর ও রাজারহাট নিউটাউন এই ৭টি বিধানসভা কেন্দ্র নিয়ে বারাসাত লোকসভা কেন্দ্রটি গঠিত।

৬০ ছুঁই ছুঁই কাকলি সকাল থেকে রাত অবধি মানুষের দরবারে উপস্থিত হচ্ছেন, করছেন অক্লান্ত পরিশ্রম। আমরা যেদিন তাঁর প্রচার কভার করতে গিয়েছিলাম সেদিন বারাসাতে ছিলেন কাকলি। সকাল ৮টা বাজতে না বাজতেই শুরু করলেন প্রচার। এরপর সূর্যদেব তার প্রখর তাপে যখন দগ্ধ করছে সবাইকে তখনও কাকলি অক্লান্ত। প্রচারের মাঝে পার্টি অফিসে পাঁচ-দশ মিনিটের বিশ্রাম। আমাদের প্রশ্নের জবাবে মোদী সরকারকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন তিনি।

রোজদিনের যুগ্ম সম্পাদক পিয়ালি আচার্যের মুখোমুখি হয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে কী বললেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার?

শুনুন!

দেখুন ছবি-

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*