করোনা আতঙ্কে ১০ দিন মধ্যপ্রদেশ বিধানসভার অধিবেশন বন্ধ রেখেছেন স্পিকার। ধরে নেওয়া হয়েছিল, এই ১০ দিন আস্থাভোট হবে না। পর্যবেক্ষকদের ধারণা, বিধানসভায় শক্তিপরীক্ষা দিতে হলে কমলনাথ সরকারের পতন নিশ্চিত। আস্থাভোট পিছিয়ে যাওয়ায় ক্রুদ্ধ হয়েছিল বিজেপি। কিন্তু সোমবার রাজ্যপাল লালজি ট্যান্ডন নিজে মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথকে নির্দেশ দিলেন, মঙ্গলবারের মধ্যে গরিষ্ঠতা প্রমাণ করুন। এর আগে বিজেপি আস্থাভোট পিছনোর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিল। তা নিয়ে শীর্ষ আদালতে শুনানি হবে মঙ্গলবারই।
সোমবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী কমলনাথ ও অন্যান্য মন্ত্রী হাসতে হাসতে বিধানসভায় ঢোকেন। কমলনাথ আঙুল দিয়ে ভিকট্রি চিহ্ন দেখান। এদিন রাজ্যপাল লালজি ট্যান্ডন এক মিনিটের সংক্ষিপ্ত ভাষণ দেন বিধানসভায়। তিনি বলেন, “প্রত্যেককেই সংবিধান মেনে চলতে হবে। বিধানসভার মর্যাদা রক্ষা করাও সকলের কর্তব্য।”
মধ্যপ্রদেশে বিরোধী দলনেতা গোপাল ভার্গব বলেন, সরকারের গরিষ্ঠতা নেই। মুখ্যমন্ত্রীর উচিত ইস্তফা দেওয়া। তাঁর কথায়, “রাজ্য সরকার গরিষ্ঠতার প্রমাণ দিচ্ছে না। তারা বিধানসভায় শক্তিপরীক্ষা পিছিয়ে দিচ্ছে। সরকারের নৈতিক পরাজয় হয়েছে। নৈতিক কারণেই কমলনাথের ইস্তফা দেওয়া উচিত।”
২০১৮ সালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী না হতে পেরে অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন প্রয়াত কংগ্রেস নেতা মাধবরাও সিন্ধিয়ার ছেলে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া। গত সপ্তাহে তিনি দলবদল করেন। তাঁর সঙ্গে ইস্তফা দেন ২২ জন বিধায়ক। এরপর কমলনাথ সরকার সংখ্যালঘু হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। কমলনাথ এদিন বলেন, “রাজ্যপাল আমাকে বলেছেন, বিধানসভার কাজকর্ম যেন মসৃণভাবে চলে। আমি তাঁকে বলেছি, সোমবার সকালে এব্যাপারে স্পিকারের সঙ্গে কথা বলব।”
কমলনাথ আগেই বলেছিলেন, গরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য যথেষ্ট সংখ্যক বিধায়ক তাঁর পক্ষে আছেন। এদিন তিনি দলের বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। পরে নির্দল বিধায়ক প্রদীপ জয়সোয়াল বলেন, “আমাদের পক্ষে যথেষ্ট সংখ্যক বিধায়ক আছেন। মুখ্যমন্ত্রী আত্মবিশ্বাসী। অপেক্ষা করুন। দেখুন কী হয়।”
এদিন সকালে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা নরেন্দ্র সিং তোমরের সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চহ্বণ। পরে তাঁরা দেখা করেন সলিসিটর জেনারেলের সঙ্গে। ২২ জন বিদ্রোহী বিধায়ক ডিসকোয়ালিফায়েড হতে পারেন কিনা, তা নিয়ে আলোচনা হয়।
কংগ্রেস তার বিধায়কদের জয়পুরে পাঠিয়ে দিয়েছিল। সোমবার তাঁদের ভোপালে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। অন্যদিকে কংগ্রেসের বিদ্রোহী বিধায়করা রয়েছেন বেঙ্গালুরুতে। এদিন সকালে মন্ত্রিসভা এক বৈঠকে বসে। তারপর কংগ্রেস অভিযোগ করে, তাদের বিধায়কদের জোর করে বেঙ্গালুরুতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরিবারের লোকজনও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না।
কংগ্রেসের এক মন্ত্রী বলেন, বেঙ্গালুরুতে আমাদের যে বিধায়কদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তাঁরা রীতিমতো আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। তাঁদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। আমাদের দু’জন মন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। পুলিশ তাঁদের হেনস্থা করেছে।
Be the first to comment