ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে হাওড়া-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস! দুর্ঘটনায় উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী, চালু টোল ফ্রি নম্বর

Spread the love

ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে হাওড়া-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস। বালেশ্বর স্টেশন থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে বাহানাগা স্টেশনে লাইনচ্যুত হয়ে গিয়েছে কমপক্ষে ১৮টি কামরা। মালগাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লেগে একেবারে ছিটকে গিয়েছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের একাধিক কামরা। মালগাড়ির উপরেও উঠে গিয়েছে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের অনেকগুলি কামরা। তারপর উদ্ধারকাজ শুরু হতেই ভয়াবহ ছবি ক্রমশ প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। লাইনচ্যুত কামরার নীচে আটকে পড়েছেন একাধিক যাত্রী। স্থানীয় বাসিন্দারাই প্রথমে উদ্ধারকাজে হাত লাগান। বগির নীচে থেকে একাধিক বয়স্ক যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে। আরও অনেক যাত্রী বগির নীচে আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাস্থলে যাচ্ছে রাজ্যের প্রতিনিধিদল। নবান্নে চালু বিশেষ হেল্পলাইন নম্বর।

টুইটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লেখেন, “বালাসোরের কাছে একটি মালগাড়ি এবং শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। আমরা ওড়িশা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। দক্ষিণ-পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। নবান্নে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। নম্বরটি হল: ০৩৩-২২১৪৩৫২৬/২২৫৩৫১৮৫। রাজ্য থেকে ৫-৬ জনের একটি প্রতিনিধিদল দুর্ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছে। মুখ্যসচিব, অন্যান্য শীর্ষস্তরীয় আধিকারিকদের মতো আমিও পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছি।”

মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার খবর পাওয়ামাত্র জরুরি বৈঠকও করেন মুখ্যসচিব। তিনি জানান, মানস ভুঁইয়া, দোলা সেন-সহ পাঁচ-ছ’জন প্রতিনিধি ঘটনাস্থলে যাচ্ছেন। রেলের তরফেও বেশ কয়েকটি হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে। শালিমারের হেল্পলাইন নম্বরটি হল ৯৯০৩৩৭০৭৪৬। হাওড়া: (০৩৩)২৬৩৮২২১৭। খড়গপুর: ৮৯৭২০৭৩৯২৫, ৯৩৩২৩৯২৩৩৯। বালেশ্বর: ৮২৪৯৫৯১৫৫৯, ৭৯৭৮৪১৮৩২২। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে উদ্ধারকারী দল ও মেডিক্যাল টিম। গ্যাস কাটার দিয়ে দরজা, জানলা কেটে শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ। রেল সূত্রে খবর, এই দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন ১৩২ জন। তাঁরা প্রত্যেকেই স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রত্যেকের শারীরিক অবস্থা যথেষ্ট আশঙ্কাজনক। এদিকে, এই দুর্ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই একাধিক ট্রেন বাতিল করা হয়েছে।

রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আপ করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ট্রেনের ইঞ্জিনের পিছনে ৩টি জেনারেল কোচ, ৫টি স্লিপার কোচ, প্যান্ট্রি কার সহ একাধিক কামরা বেলাইন হয়ে গিয়েছে। জেনারেল কোচ, স্লিপার কোচগুলি একেবারে দুমড়ে-মুচড়ে গিয়েছে। জেনারেল কোচেই বেশি যাত্রী ছিল। দুর্ঘটনার সময় ট্রেনটির গতিবেগ অত্যন্ত বেশি ছিল। ফলে কতকগুলি কোচ একেবারে মালগাড়ির মাথায় উঠে যায়। স্থানীয়রা প্রথমে উদ্ধারকাজে হাত লাগালেও পরে রেল আধিকারিক, পুলিশ ও উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। সূত্রের খবর, ওড়িশা ফায়ার সার্ভিসের DG সুধাংশু সারেঙ্গীকে উদ্ধার অভিযানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া উদ্ধারকাজে নেমেছে ওড়িশা রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।

করমণ্ডল এক্সপ্রেসটি করেই ভেলোরে চিকিৎসা করাতে যান বহু মানুষ। ট্রেনটি হাওড়ার শালিমার স্টেশন থেকে ছাড়ে। ফলে এই ট্রেনে রাজ্যেরও বহু মানুষ থাকেন। এদিনও তার ব্যতিক্রম ছিল না। এই করমণ্ডল এক্সপ্রেসে করে রাজ্যের বহু মানুষ ভেলোড়ে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছিলেন। শিশু সহ প্রচুর বয়স্ক মানুষ ট্রেনে ছিলেন। ফলে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগ বাড়ছে।

রেল সূত্রে খবর, দুর্ঘটনাগ্রস্ত হাওড়া-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেসটির LHB কোচ ছিল। LHB কোচ দুর্ঘটনা কমায়। পুরোনো IFC কোচ হলে আরও বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত এবং হতাহতের সংখ্যা বেড়ে যেত বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*