চোখে স্বপ্ন ছিল বড় ফুটবলার হওয়ার। প্রতিভাও ছিল। আর সেই প্রতিভার জেরেই ধীরে ধীরে ময়দানে নিজের জায়গা করে নিয়েছিল কৌশিক শীল। কিন্তু মুহূর্তের অসতর্কতা তার সব স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করে দিল। খেলা ছিল ধ্যান-জ্ঞান। খেলোয়াড়ের বেশেই পাড়ি দিল পরপারে।
হুগলির কুন্তিঘাটের শেরপুরের ক্লাস নাইনের ছাত্র কৌশিক শীল ছিল এলাকার এক উদীয়মান ফুটবলার। বাবা-মা’র সঙ্গে গ্রামের লোকেদেরও ধারণা ছিল, একদিন বড় ফুটবলার হয়ে পরিবারের নাম, কুন্তিঘাটের নাম উজ্জ্বল করবে শিবপুর হাই স্কুলের এই ছাত্র। খেলত স্থানীয় শিবপুর স্পোর্টিং ক্লাবে। এ বছরই ময়দানের নামকরা ক্লাব সাদার্ন সমিতিতে সই করেছিল কৌশিক। এমনকী সাদার্ন সমিতির হয়ে জুনিয়ার আই লিগ অর্থাৎ অনুর্ধ্ব ১৩ আই লিগ খেলার কথাও ছিল কৌশিকের।
সেই জন্য প্রত্যেকদিন কুন্তিঘাট থেকে দমদমে সাদার্ন সমিতির মাঠে প্র্যাকটিস করতে আসত কৌশিক। সোমবার সকাল ৯ টায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে কাটোয়া লোকালে চেপে বালিতে নামে কৌশিক। তারপর সেখান থেকে বাসে করে প্র্যাকটিসের জায়গায় যায়। প্রতিদিন এ ভাবেই যাতায়াত করত সে। কিন্তু বিকেল হয়ে যাওয়ার পরেও ফোনে কৌশিকের সঙ্গে যোগাযোগ না করতে পেরে তার মা চিন্তা শুরু করেন।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ বেলুড় জিআরপি’র তরফে কৌশিকের বাড়িতে ফোন করে দুঃসংবাদ জানানো হয়। বাড়ি ফেরার সময় বালি স্টেশনে রেল লাইন পেরোতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে কৌশিকের। খবর জানতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে ছুটে যান তার মা-বাবা। প্রতিভাবান ফুটবলার কৌশিকের মৃত্যুতে শেরপুর জুড়ে শোকের ছায়া। মা টুম্পাদেবীর বক্তব্য, ” ছেলে বলত আই লিগ খেলবে। বড় ফুটবলার হবে। এতদিন আমিই সঙ্গে করে ওকে অনুশীলনে নিয়ে যেতাম। কয়েকদিন ধরে একা যাতায়াত করছিল কৌশিক। কীভাবে যে এ সব হয়ে গেল?”
Be the first to comment