ভয়াবহ বন্যায় তছনছ হয়ে গিয়েছে কেরল। অনেকেই বলেছেন, ‘গডস ওউন ল্যান্ড’ অর্থাৎ দেবতার নিজের দেশেই রুষ্ট হয়েছে ভগবান। আর তাই প্রকৃতির রোষে বেহাল হয়ে গিয়েছে কেরলের জনজীবন। কিন্তু কী বলছে কেরলের প্রশাসন। বন্যার জন্য তাঁরা কিন্তু দায়ী করছেন তামিলনাড়ুকে।
তামিলনাড়ুর মুল্লাপেরিয়ার বাঁধ থেকে আচমকাই অতিরিক্ত পরিমাণে জল ছাড়া হয়েছে। আর কেরলে বন্যার পিছনে এটা অবশ্যই অন্যতম একটা কারণ। সুপ্রিম কোর্টে এমনটাই জানিয়েছে কেরল সরকার। মুল্লাপেরিয়ার বাঁধের জল অতিরিক্ত পরিমাণে ছাড়ার ফলে তা চাপ সৃষ্টি করেছে ইদুক্কি জলাধারের উপর। ফলে টানা বৃষ্টির মধ্যেও ইদুক্কি জলাধারের বেশ কয়েকটি লকগেট খুলতে হয়েছে। যার ফলে সৃষ্টি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। প্রসঙ্গত প্রায় ২৬ বছর পর ইদুক্কি জলাধারের এইসব লকগেটগুলি খোলা হয়েছিল। মুল্লাপেরিয়ার বাঁধের জলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের কথা জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জমা পড়েছিল একটি পিটিশন। আর তারই প্রেক্ষিতে দেশের শীর্ষ আদালতকে এই তথ্য দিয়েছে কেরল।
কেরল জানিয়েছে, যখন জলের উর্দ্ধসীমা ১৩৬ ফুট সেই সময় বলা হয়েছিল তামিলনাড়ু প্রশাসন যেন মুল্লাপেরিয়ার বাঁধ থেকে ধীরে ধীরে অল্প পরিমাণে জল ছাড়ে। যখন জলের লেভেল ১৩৯ ফুটে পৌঁছে যায় তখনও দেওয়া হয়েছিল একই প্রস্তাব। কিন্তু কোনও কথাই শোনেনি তামিলনাড়ু প্রসাশন। দেশের শীর্ষ আদালতে এমনটাই জানিয়েছেন কেরলে চিফ সেক্রেটারি। যদিও তামিলনাড়ু জানিয়েছে, কেরলে বৃষ্টি শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জল ছাড়েনি তারা। বরং প্রায় এক সপ্তাহ পরে ১৬ অগস্ট জল ছাড়া হয়েছে মুল্লাপেরিয়ার বাঁধ থেকে।
প্রসঙ্গত গত ৮ অগস্ট থেকে প্রায় দু’সপ্তাহ টানা বৃষ্টি চলেছে কেরলে। ভারী বৃষ্টির জেরে বন্যার পাশপাশি ধসও নেমেছিল কেরলে বহু জেলায়। মারা গিয়েছেন অন্তত ৩৫০ জন। ঘর ছাড়া হয়েছেন ২ লক্ষেরও বেশি মানুষ। সম্পত্তি-ফসল সব মিলিয়ে ক্ষতির পরিমাণ ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। প্রায় ১০ হাজার কিলোমিটারের বেশি রাস্তা ভেঙে গিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছে, গত ৯৪ বছরে এমন বন্যা দেখেনি কেরল। এই ধাক্কা সামলে উঠতে সম্ভবত বছর ঘুরে যাবে। এমনটাই আশঙ্কা করছেন তাঁরা।
Be the first to comment