প্রবাদে আছে পড়াশোনা শেখার কোনও বয়স হয় না। ইচ্ছে থাকলেই উপায় হয়। আর সেই মনের জর এবং ইচ্ছেটাই দেখিয়েছেন কেরলের ৯৬ বছরের বৃদ্ধা। কেরল সরকারের সাক্ষরতা সংক্রান্ত একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন এই বৃদ্ধা। দিয়েছিলেন একটি পরীক্ষাও। আর সেই পরীক্ষাতে নিজের বয়সের থেকেই ২ শতাংশ বেশি নম্বর পেয়েছে তিনি। ৯৮ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে সাক্ষরতার এই পরীক্ষায়। ওই বৃদ্ধাই ছিলেন পরীক্ষার বয়সে সবচেয়ে বড় পরীক্ষার্থী।
রাজ্য থেকে অশিক্ষা দূরীকরণের জন্য এই পদক্ষেপ নিয়েছে কেরল সরকার। সমগ্র রাজ্যের সব মানুষকে সাক্ষর করাই হলো লক্ষ্য। আর সবার সামনে উদাহরণ হয়ে দাঁড়ালেন কাত্যায়নী আম্মা। কেরল লিটারেসি প্রোগ্রাম ‘অক্ষরালক্ষম’-এ পরীক্ষায় ১০০-র মধ্যে ৯৮ পেয়েছেন এই বৃদ্ধা। তাঁর বেসিক পঠন-পাঠন, লেখার স্কিল এবং অঙ্কের জ্ঞান বিচার করা হয়েছে এই পরীক্ষার মাধ্যমে। আর সব ক্ষেত্রেই কাত্যায়নী আম্মা নিজের সেরাটা দিয়েছেন। তাই রেজাল্টেও ছাপিয়ে গিয়েছেন সবাইকে। পেয়েছেন সর্বোচ্চ নম্বর। চলতি বছরে আনুমানিক ৪২ হাজার ৯২৩ জন এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। যাঁদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন আলাপ্পুজা জেলার কাত্যায়নী আম্মা।
১৯৯১ সালের ১৮ এপ্রিল কেরলে পূর্ণ শিক্ষিত রাজ্য হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছিল।ইউনেসকো-র নিয়মানুসারে এর অর্থ যে কেরলের ৯০ শতাংশ মানুষ ‘৯১ সালে থেকেই শিক্ষিত ছিলেন। কিন্তু ২০১১ সালের সেনসাস ডেটা প্রকাশ্যে আসতেই সামনে আসে নতুন তথ্য। ডেটা অনুযায়ী দেখা যায় রাজ্যের আনুমানিক ১৮ লক্ষ লোক তখনও অশিক্ষিত। কারোও হয়তো অক্ষ জ্ঞানটুকুও হয়নি। এরপর ২০১৮ সালের ২৬ জানুয়ারি কেরল সরকার শুরু করে ‘অক্ষরালক্ষম’ প্রকল্প। সরকারের তরফে জানানো হয়েছে এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো কেরল থেকে অশিক্ষা দূর করা। সমাজের সব স্তরের মানুষ বিশেষ করে উপজাতি গোষ্ঠী এবং মৎসজীবীরা যেন সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারে এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেই ব্যবস্থাই নিয়েছে কেরল সরকার।
Be the first to comment