বিজেপি সরকারের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে দেশের সর্বস্তরের মানুষ সরব হয়েছে। সাধারণ থেকে বিদ্বজ্জন এবং রাজনৈতিক বিরোধীরাও শক্তহাতে পথে নেমেছেন। পরিস্থিতি পৌঁছেছে চরমে। বিভ্রান্তিতে মানুষ বিরক্ত, অনেকটা ভয় পেয়েই। তবে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর চুপ থাকা নিয়ে উঠেছে নিন্দার ঝড়। তবে বিরোধিতার কেন্দবিন্দু মজবুত না হলেও, বিরোধিতা আসছে বিভিন্ন অ-বিজেপি রাজ্যগুলি থেকে। নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করে দেশের প্রথম রাজ্য হিসেবে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হল কেরল।
পিনারাই বিজয়ন শাসিত কেরল সরকার জানিয়েছে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন রাইট টু ইকুইয়্যালিটির বিরুদ্ধে অর্থাৎ সমান অধিকারের বিরুদ্ধে যার উল্লেখ ভারতীয় সংবিধানে স্পষ্ট রয়েছে।
নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসি নিয়ে শুরু থেকেই আন্দোলন করছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রের এই দুই আইন বালিতেরও দাবি তুলেছেন তৃণমূলনেত্রী। সিএএ ও এনআরসির প্রতিবাদে গত সপ্তাহে বাম ও কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন বনধের ডাক দিয়েছিল। বাম ও কংগ্রেসের ইস্যুকে সমর্থন করলেও বনধ ডাকার বিরোধিতা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বনধের দিন রাজ্যের একাধিক জেলায় পথে নেমেও প্রতিবাদ জানান তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা। বেশ কয়েকটি এলাকায় তৃণমূলের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে দেখা যায় বনধের সমর্থনে রাস্তায় নামা বাম ও কংগ্রেসের কর্মী-সমর্থকদের। আর এতেই বেজায় চটেছেন তৃণমূলনেত্রী। ঘোষণা করে দেন দিল্লিতে সোমবারের বিরোধী দলের বৈঠকে যাবেন না তিনি।
‘রাজ্যে বনধের নামে বাম ও কংগ্রেস যা করেছে তারপর তাঁদেরই নেতাদের সঙ্গে দিল্লিতে গিয়ে বৈঠক করা সম্ভব নয়।’একথা আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেছিলেন, ‘এনআরসি ও সিএএ নিয়ে আমিই প্রথম আন্দোলন শুরু করেছিলাম। কিন্তু কংগ্রেস ও সিপিএম যেটা করছে সেটা আন্দোলন নয়, ভাঙচুর।’
নাগরিকত্ব আইন ও এনআরসির প্রতিবাদে কেন্দ্র বিরোধিতায় সরব হয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম-সহ একাধিক বিরোধী দল৷ উত্তর পূর্বের অসম, ত্রিপুরা, মণিপুর থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে উত্তর ভারতের রাজ্যগুলিতেও।
উত্তরপ্রদেশে প্রবল প্রতিবাদ আন্দোলন হয়। আন্দোলনে নেমে গুলিতে ২১ জনের মৃত্য়ুও হয় যোগীরাজ্যে। এমনকী রাজধানী দিল্লিতেও পথে নামেন হাজার-হাজার মানুষ। কেন্দ্র বিরোধিতায় সরব হয় দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও। পড়ুয়াদের আন্দোলনে লাঠিচার্জের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে।
দেশজুড়ে যখন কেন্দ্র বিরোধিতায় ক্রমেই সুর চড়ছে, ঠিক সেই আবহেই দিল্লিতে বিরোধীদের নিয়ে বৈঠক ডাকেন কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গান্ধী। বিজেপি বিরোধী সব দলকেই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয় । বিকেলে সংসদ ভবনে হবে সেই বৈঠক। সেই বৈঠকেই গরহাজির থাকবেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
Be the first to comment