শতাব্দীর ভয়াবহতম প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে কেরল। বন্যার তাণ্ডবে তছনছ হয়ে গিয়েছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট থেকে প্রায় গোটা রাজ্যই। গত এক সপ্তাহে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে প্রায় সাড়ে তিনশো। দিকে দিকে যত জল সরছে ধ্বংসস্তূপে মিলছে আরও দেহ। এখনও জলবন্দি লক্ষাধিক। কেরলের সর্বত্রই এখন খালি হারানোর যন্ত্রণা।
বিপর্যস্ত রাজ্যেবাসীকে সাহায্য করতে এগিয়ে এসেছে প্রশাসন থেকে আম জনতা। কেউ কেউ তাঁদের রুজিরুটিও তুলে দিয়েছেন বন্যাদুর্গতদের বাঁচাতে। আর্থিক সাহায্যে হাত বাড়িয়েছে বিশিষ্ট জনেরাও। পিছিয়ে নেই সংশোধনাগারের বন্দিরাও। দুর্গতদের মুখে অন্ন তুলে দিতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছেন তাঁরাও।
বন্যা আক্রান্তদের জন্য এখনও পর্যন্ত ৪০-৫০ হাজার রুটি বানিয়েছেন তিরুঅনন্তপুরমের পূজাপ্পারা কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের বন্দিরা। সেই সঙ্গে সব্জি, চিকেন কারি বানিয়ে প্যাক করে তাঁরা তুলে দিয়েছেন প্রশাসনিক কর্তাদের হাতে। সেই খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন ত্রাণ শিবিরগুলিতে।
সংশোধনাগারের ৫০ জন বন্দি গত এক সপ্তাহ ধরে এই ভাবে খাবার বানিয়ে ত্রাণ শিবিরগুলিতে পৌঁছে দিয়েছেন। জেল কর্তারা জানিয়েছেন, এই বন্দিদের নিজস্ব একটা ব্র্যান্ড আছে যার নাম ‘ফ্রিডম’। বেশ কয়েক বছর ধরেই তাঁরা খাবার বানানোর কাজ শুরু করেছেন। খুব কম দামে ওই খাবার বিক্রি করা হয় শহরের নানা প্রান্তে। বন্যা দুর্গতদের জন্য এখন তাঁরা দিনরাত পরিশ্রম করে খাবার তৈরি করছেন। গত এক সপ্তাহে প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি চাপাটি বানিয়েছেন বন্দিরা।
জেলের এক শীর্ষ আধিকারিক বলেছেন, ‘‘এই খাবার গুলি ভাল ভাবে প্যাক করে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যে কিছু পৌঁছে যাচ্ছে ত্রাণ শিবিরে, বাকিগুলি হেলিকপ্টারে করে ছুঁড়ে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন বাড়ির ছাদে বা রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিদের হাতে।’
Be the first to comment