বাংলায় অস্তিত্ব সংকট। জমানা হাতছাড়া হয়েছে ত্রিপুরাতেও। থাকার মধ্যে শুধুমাত্র কেরল। এ বার দক্ষিণের সেই রাজ্যেই সিপিএমের অবস্থা দেখে অনেকেই বলছেন, ‘লাজ লজ্জার মাথা খেয়েছে দলটা।’
সম্প্রতি কেরলের এক ডিওয়াইএফআই নেত্রী দলের বিধায়ক পিকে শশীর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তোলেন। রাজ্যস্তরে কিছু হচ্ছে না দেখে চিঠি পাঠান একেবারে দিল্লির সদর দফতরে। এরপর কেটে গিয়েছে দু’দিনের বেশি সময়। এ বার কেরলের মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন এমসি জশফিন অভিযুক্ত বিধায়ককে সরাসরি আড়াল করতে নেমে পড়লেন।
মহিলা কমিশনের প্রধান এই ঘটনা সম্পর্কে মন্তব্য করেন, “এটা নতুন কিছু নয়। আমরা সবাই মানুষ। ভুল তো হতেই পারে। উনি দলের অভ্যন্তরে বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছেন।”
সিপিএমের যুব সংগঠনের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ওই নেত্রী গত মাসে প্রথম এই অভিযোগ তোলেন। পালাক্কাড়ের মানকৌডে দলের এরিয়া কমিটির দফতরের ভিতরেই তাঁকে যৌন হেনস্থা করা হয় বলে চিঠি দেন। কোনও নড়াচড়া না দেখে ই-মেল করেন সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য বৃন্দা কারাটকে। তাতেও হেলদোল পড়েনি সর্বহারার দলে। অবশেষে বৃন্দাকে করা মেইল ফরওয়ার্ড করেন দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে। ইয়েচুরি বলেন, দলীয় পদ্ধতি মেনে বিষয়টি কেরল রাজ্য কমিটিকে দেখার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর থেকে সুপারিশ করা হয়েছে। এরপর প্রকাশ-জায়া নীরবতা ভঙ্গ করেন। সিপিএম পলিটব্যুরোর তরফে কেন্দ্রীয় দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেত্রী হিসেবে বৃন্দা বলেন, একে গোপালন ভবন এরকম কোনও ঘটনায় কেরল রাজ্য কমিটিকে কোনও সুপারিশ করেনি। এরপরই আরও একবার সামনে চলে আসে কারাট-ইয়েচুরিদের লড়াই।
কিন্তু এ কী বললেন কেরলের মহিলা কমিশনের প্রধান?
সাংবাদিকরা প্রশ্ন করায় বৃন্দা ঘনিষ্ঠ সিপিএমের মহিলা সংগঠনের এই নেত্রী বলেন, “এই ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ হয়নি। অভিযোগ হয়নি জাতীয় মহিলা কমিশনেও। সুতরাং রাজ্য মহিলা কমিশনের কোনও এক্তিয়ার নেই এই ঘটনায় নাক গলানোর।” এই কথার প্রেক্ষিতেই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, নারী নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে মহিলা কমিশন তো স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করতে পারে! তখনই তাঁর উত্তর, “ভুল তো হতেই পারে।”
বাংলা থেকে নির্বাচিত ডিওয়াইএফআই-এর কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্য বলেন, “এই ঘটনা নিয়ে আমাদের হস্তক্ষেপ করা উচিত ছিল। কিন্তু বেশ কিছু বড়বাবু, মেজোবাবুদের চাপে তা করা যায়নি।”
Be the first to comment