মধ্যরাতে ব্যারিকেড সরিয়ে নিয়েছিল পুলিশ। কিষান ঘাটের দিকে যাত্রা শুরু করেছিল কৃষকদের মিছিল। কিষান ঘাটে চৌধরী চরণ সিংয়ের সমাধিস্থলে পৌঁছানোর পর নিজেদের বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষ করলেন কৃষকরা।
ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের প্রধান নরেশ টিকাইত জানিয়েছেন, ” আমরা ১২ দিন ধরে পদযাত্রা করেছি। এই ১২ দিনে সব প্রতিকূলতাকে দূর করে কৃষকরা হেঁটেছেন। ফলে তাঁরা এই মুহূর্তে ক্লান্ত। আমাদের লক্ষ্য ছিল পদযাত্রা শেষ করা। সেটা আমরা করেছি। আমরা সরকারের কাছে আমাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করে যাব। কিন্তু এখনকার মতো আমরা পদযাত্রা শেষ করলাম। ”
ভোর থেকেই কৃষকরা নিজেদের বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। কিন্তু দিল্লি ও শহরতলির অন্যান্য অংশে ট্রাফিকের যেন কোনও সমস্যা না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে। যদিও বুধবারও গাজিয়াবাদের সব স্কুল বন্ধ রাখা হবে বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীতে ঢোকার আগেই শক্ত ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেওয়া হয়েছিল ৩০ হাজার কৃষকের মিছিল। চলেছিল টিয়ার গ্যাস, জলকামান। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার কৃষক জমি ছাড়েননি। ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের নেতারা জানিয়ে দেন, মঙ্গলবার সারারাত ওখানেই অবস্থান করবেন কৃষক, ক্ষেতমজুররা। বুধবারও বিক্ষোভ চলবে বলে জানিয়েছিলেন কৃষক নেতারা। পরিস্থিতির আগাম আন্দাজ করে মঙ্গলবার বিকেলেই গাজিয়াবাদের স্থানীয় প্রশাসন ঘোষণা করে দেয় বুধবার বন্ধ রাখা হবে সমস্ত স্কুল-কলেজ।
কৃষি ঋণ মুকুব, বিদ্যুৎ এবং পেট্রোপণ্যে ভর্তুকি, ৬০ বছরের বেশি বয়সী কৃষকদের জন্য পেনশন চালু এবং স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করা সহ ১১ দফা দাবিতে উত্তরপ্রদেশের বস্তি, হরিদ্বার, গণ্ডা-সহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর শুরু হয় কিষান ক্রান্তি পদযাত্রা। দিল্লিতে ঢোকার আগেই দিল্লি-উত্তর প্রদেশ সীমানায় আটকে দেওয়া হয় মিছিল। ভারতীয় কিষান ইউনিয়ন নামে যে সংগঠনটি এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছিল তার প্রধান নরেশ টিকায়েত বলেন, “আমরা তো শৃঙ্খলা ভাঙিনি। আমাদের থামিয়ে দেওয়া হল কেন? আমরা সরকারের কাছে দাবিদাওয়ার কথা জানাতে চেয়েছিলাম। নিজেদের দেশের সরকার যদি আমাদের কথা না শোনে, তা হলে কি পাকিস্তান বা বাংলাদেশে যাব?
এরপরেই মধ্যরাতে ব্যারিকেড সরিয়ে নেয় পুলিশ। উত্তরপ্রদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা কৃষকদের মিছিল এগিয়ে যায় কিষান ঘাটের দিকে। কিষান ঘাটে পৌঁছে শেষ হয় কিষান ক্রান্তি পদযাত্রা।
Be the first to comment