এক সপ্তাহে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যু। মৃতদের দু’জনের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ৷ তাই মৃত্যুর পরে দেহ তুলে দেওয়া হয়েছিল পরিবারের হাতে ৷ এরপরই ওই পরিবারের আরও একজনের মৃত্যু হয় ৷ এই ঘটনার পরই পরিবারের ১৭ জনকে পাঠানো হয় রাজারহাটের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ৷ ফলে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে উত্তর কলকাতার জোড়াবাগান থানা এলাকায় ৷
সূত্রের খবর, কলকাতা জোড়াবাগান থানা এলাকার টেগোর ক্যাসল স্ট্রিট ৷ এখানেই একটি বাড়িতে থাকেন একটি পরিবারের ২০ জন সদস্য৷ গত ৮ দিনে ওই পরিবারের ৩ ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে ৷ এরপরই ওই এলাকায় করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ৷ জোড়াবাগানের ওই পরিবারের ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধের প্রথমে জ্বর আসে ৷ সঙ্গে হয় কাশি ৷ এরপরই তাকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৷
তিনি হাসপাতালে ভর্তি হতে না হতেই তার ৬৯ বছর বয়সের দাদার জ্বর হয় ৷ তাকেও ভর্তি করা হয় এমআর বাঙ্গুর হাসপাতালে ৷ পরে তাদের মৃত্যু হয় ৷ এছাড়া ওই পরিবারের ৫৭ বছরের এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয় ৷ তবে বৃহস্পতিবার বিকেলে নবান্নে মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা জানিয়েছিলেন, এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৭২। বুধবার সংখ্যাটা ছিল ৫৫০।
শুক্রবার সকালেও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের বুলেটিনে বলা হয়েছিল যে বাংলায় এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭৯৫ জন। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, প্রকৃত সংখ্যা তার থেকে অনেকটাই বেশি। ফলে ‘কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে এই হিসাবের অস্বচ্ছতা ও ধন্ধ’ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে বলেই অনেকের মত।
এদিকে কেন্দ্রের পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে,শুধু এই কলকাতাতেই বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৪৮৯ জন করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। তার পরই খারাপ অবস্থা হাওড়ার। সেখানে কোভিড আক্রান্তের ১৭৬। এবং উত্তর চব্বিশ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুরে যথাক্রমে ১২২ জন ও ৩৪ জন এখনও পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব প্রীতি সুদন সব রাজ্যের মুখ্যসচিবকে চিঠি দিয়ে গোটা দেশের রেড, অরেঞ্জ ও গ্রিন জোনের তালিকা পাঠিয়েছেন। তাতে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে দশটি জেলা হল রেড জোন।
ওই দশ জেলা হল, কলকাতা, হাওড়া, দুই চব্বিশ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং ও মালদহ। অরেঞ্জ জোন হল, হুগলি, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদ। তবে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পংয়ের মতো জেলাকে রেড জোনে ফেলা যায় না। কারণ, দার্জিলিংয়ে শেষ কারও শরীরে কোভিড পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে ২১ এপ্রিল। জলপাইগুড়িতে ৪ এপ্রিল এবং কালিম্পংয়ে ২ এপ্রিলের পর কোনও কোভিড আক্রান্তের খোঁজ মেলেনি।
Be the first to comment