অন্য উৎসবেও কি অনুদান দেওয়া হয়? রাজ্যকে প্রশ্ন কলকাতা হাইকোর্টের

Spread the love

অন্য উৎসবেও কি অনুদান দেওয়া হয় ? দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে অনুদান দেওয়া নিয়ে মামলায় রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চাইল বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।

বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সরকার অনুদান কি শুধু দুর্গাপুজোয় দেয় নাকি অন্য উৎসবেও দেওয়া হয় ? ইদের সময় কি দেওয়া হয়েছিল ? দুর্গাপুজো নিয়ে আমরাও গর্বিত কিন্তু তাই বলে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে এইভাবে টাকা দেওয়া যায়?

মামলার শুনানিতে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনেরাল কিশোর দত্ত বলেন, রাজ্য সরকার দুর্গাপুজো কমিটিকে টাকা দিয়েছে মাস্ক-স্যানিটাইজ়ার কেনার জন্য। বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় তখন বলেন, এটা তো সরকার নিজেই কিনে দিতে পারত। তাতে সরকারের খরচ কম হত। তাঁর প্রশ্ন, যেখানে সংক্রমণের ভয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনও বন্ধ রাখা হয়েছে সেখানে পুজোর অনুমতি কীভাবে দেওয়া হল? কী কী সুরক্ষাবিধি মেনে চলছে রাজ্য ? ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকার কী ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেছে?

এরপর ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, অ্যাডভোকেট জেনেরাল এবং মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যকে একসঙ্গে বসে এই সমস্ত বিষয়ে আলোচনা করতে হবে ৷ আলোচনা থেকে কী উঠে এল তা আগামীকাল আদালতে জানাতে হবে ৷

দুর্গাপুজো কমিটিগুলোকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়ার ঘোষণার পর ৯ অক্টোবর সৌরভ দত্ত নামে এক ব্যক্তি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন। তিনি পুরোহিত ভাতার বিরুদ্ধেও মামলা করেন। তাঁর বক্তব্য, ভারতবর্ষের মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষ দেশে এভাবে কোনও একটি ধর্মের নামে টাকা দেওয়া যায় না ৷ এটা সংবিধানবিরোধী।

এরপর বুধবার বারোয়ারি দুর্গাপুজোায় সাধারণের প্রবেশ বন্ধ করার দাবিতে ফের আর একটি মামলা দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে। মামলাকারী অজয় কুমার দের বক্তব্য, ওনাম উৎসবের পর কেরালায় ভয়ংকরভাবে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। ক্রমাগত খারাপ হচ্ছে সেখানকার পরিস্থিতি। এখানেও দুর্গাপুজো সেইভাবে পালিত হলে কোরোনা সংক্রমণ বাড়বে। মহারাষ্ট্রে গণেশ উৎসব এবং মহরমে অনুমতি দেওয়া হয়নি সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ভয়ে। শুধুমাত্র ছোটো করে পুজো করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।

তেমন এ রাজ্যেও বারোয়ারি পুজো এ বছরের জন্য বন্ধ রাখা হোক। একান্ত যদি ক্লাবগুলো পুজো করতেই চায় তাহলে অত্যন্ত ছোটো করে পুজো করা হোক এবং সেখানে সাধারণের প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হোক । এই দু’টি মামলারই শুনানি ছিল আজ বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে।

টাকা দেওয়া নিয়ে কি কি প্রশ্ন তুলল হাইকোর্ট দেখে নেওয়া যাক তা একবার-

১) অনুদান কি শুধু দূর্গাপূজাতেই দেয় সরকার ? নাকি অন্য উৎসবেও দেওয়া হয় ?
ঈদেও কি দেওয়া হয়েছিল ?
২) আপনারা বলছেন যে এই টাকা দেওয়া হচ্ছে মাস্ক- স্যানিটাইজার কেনার জন্য। এটা তো সরকার নিজেই কেন্দ্রীয়ভাবে কিনে করতে পারত। তাতে খরচ কম হতো।
৩) যেখানে সংক্রমণের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো বন্ধ, সেখানে পুজোর অনুমতি কিভাবে দিলেন?
৪) কি কি সুরক্ষা বিধি মেনে চলছেন আপনারা?
৫) ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্লু-প্রিন্ট কি?
৬) সব কাজ পুলিশ করলে ক্লাবকে টাকা দেওয়ার কি যুক্তি ? – মন্তব্য বিচারপতি সঞ্জীব ব্যানার্জীর।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*