সপ্তাহখানেক সময় দেওয়া হোক, রাজ্য স্কুল খুলতে সচেষ্ট ৷ হাইকোর্টে জানালেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে শুক্রবার মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “স্কুল কলেজ অবিলম্বে খোলা দরকার। দূরত্ববিধি মেনেই স্কুল হোক। সমস্তকিছু দূরত্ব বিধি মেনে চলছে, শুধু স্কুলই কেন বন্ধ? মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ৷
এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা সবাই স্কুল খুলতে সচেষ্ট। অনলাইনে শিক্ষা এবং সশরীরে শিক্ষার আকাশ-পাতাল তফাৎ। আমরা জানি। কিন্তু সাবধানে চলতে হবে। স্কুল খোলার ব্যাপারে রাজ্যেরই দায়িত্ব নেওয়ার কথা।”
অ্যাডভোকেট জেনারেল আরও বলেন, এটা সামাজিক ও শিক্ষা সংক্রান্ত একটা নীতির ব্যাপার। আমরা পুজার আগে স্কুল খুলেছিলাম। কিন্তু বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি। আমরা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছি প্রতিদিন। ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ১৮ বছর বয়সের নিচে ভ্যাকসিন নিতে পারেনি। কেন্দ্র সবে ১২ বছরের বেশি বয়সিদের টিকাকরণের অনুমোদন দিয়েছে। ১৫-১৮ বছরের ৪৫ লক্ষ ছেলে মেয়েকে ভ্যাকসিন দেওয়া জরুরি। ৩৩ লক্ষ প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছে। প্রথম ডোজের দু-তিন সপ্তাহের পর্যন্ত খেয়াল রাখা দরকার। অন্তত ৮৫ শতাংশ ছেলেমেয়ের ভ্যাকসিন না হলে রাজ্যের পক্ষে বিষয়টি চিন্তার। ওমিক্রন খুব দ্রুত সংক্রমণ ছড়ায় সেটা আমরা ইতিমধ্যেই জেনেছি। তাতে আক্রান্ত হলে বাচ্চাদের ক্ষতি হতে পারে ৷ আমরা এই নিয়েও চিন্তিত। এই ব্যাপারে নীতি নির্ধারণ করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
রাজ্যকে আরও কিছুটা সময় দেওয়া হোক প্রস্তাব দিয়ে তিনি জানান, ১৫ বছরের কম বয়সিদের সেই ভাবে ভ্যাকসিন হয়নি। এই ব্যাপারে রাজ্য সবার প্রস্তাবকে স্বাগত জানায়। ইউরোপের বিভিন্ন স্কুলের তথ্য পরিসংখ্যান দিয়ে রাজ্য দেখিয়েছে তাদের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নত হওয়ার সত্ত্বেও স্কুল খুলছে না । আরও কিছুদিন সময় দেওয়া হোক রাজ্যকে। রাজ্য নিরন্তর এই ব্যাপারে আলাপ আলোচনা করছে। আমরা প্রাথমিক স্তরে পাড়ায় শিক্ষালয় চালানোর পরিকল্পনা করেছি। বিশেষজ্ঞরা এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন। তারপর স্কুল খোলা হবে। সপ্তাহ খানেক সময় দেওয়া হোক। রাজ্য স্কুল খুলতে সচেষ্ট।
এদিন মামলাকারীদের তরফে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত কত ছেলেমেয়ে স্কুল ড্রপ আউট হয়েছে তার একটা হিসাব আদালতে জমা দেওয়ার আর্জি জানানো হয় আজ। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ফের মামলাটি শুনানির জন্য রেখেছেন।
Be the first to comment