পৌর আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে প্রায় ৫ হাজার বিপজ্জনক বাড়ি এখন মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে শহরের বুকে। একের পর এক বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটছে। মৃত্যুও হচ্ছে। কদিন আগে বৈঠকখানা বাজারে একটি বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে দু’জনের মৃত্যু হয়। কলকাতা পৌরনিগমের ঢিলেঢালা মনোভাবের কারণেই দুর্ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের।
বিপজ্জনক বাড়ির ক্ষেত্রে পৌরনিগমের আগের আইন ছিল অনেকটা শিথিল। নতুন আইন পাস হয়েছে গত বছর। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, সেই আইন শুধু রয়ে গেছে খাতায়-কলমেই। পৌরনিগম কার্যকর করতে পারেনি নতুন আইন। আগের আইন অনুযায়ী কলকাতা পৌরনিগম শুধু বিপজ্জনক বাড়ির ক্ষেত্রে তকমা লাগানো, প্রয়োজনে মাইকিং করা, বাসিন্দা বা মালিকের সঙ্গে কথা বলে চাপ দিয়ে ও হ্যান্ডবিল ছাপিয়ে বিলি করতে পারত। বাড়ি খালি করে দেওয়ার ক্ষমতা ছিল না। নতুন আইনের ৪১১/৫ ধারায় কলকাতা পৌরনিগম বিপজ্জনক বাড়ি খালি করতে পারে। প্রয়োজনে পুলিশের সাহায্যও নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু অভিযোগ, নতুন আইন থাকলেও পৌরনিগম এখনও কোনও কঠোর পদক্ষেপ নিতে পারেনি। নতুন আইন প্রয়োগ করে একটিও বিপজ্জনক বাড়ি খালি করতে পারেনি।
এবিষয়ে কলকাতা পৌরনিগমের মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নতুন আইন আছে ঠিকই। কিন্তু, জোর করে বাড়ি থেকে টেনে বার করে দিতে পারি না কাউকে। বিপজ্জনক বাড়ির বাসিন্দারা বাড়ি ছেড়ে বের হচ্ছেন না। আমরাও কিছু করে উঠতে পারছি না। নতুন আইনে বলা আছে, পৌরনিগম বাড়ি দখল করে থার্ড পার্টিকে (প্রোমোটার) সঙ্গে নিয়ে সেই বাড়ির পুননির্মাণ করবে। নতুন বাড়ি তৈরি হওয়ার পর বাসিন্দাদের সমপরিমাণ জায়গা ফেরত দেওয়া হবে। বাকি জায়গা পৌরনিগম বা প্রোমোটার নিজের কাজে লাগাবে।”
যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, ভোটব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়েই শোভন চট্টোপাধ্যায় এখনও নতুন আইনের প্রয়োগ করেননি। আইন রয়েছে আইনের জায়গায়। এবিষয়ে কলকাতা পৌরনিগমের বিরোধী দলনেত্রী রত্না রায় মজুমদার বলেন, “আইন থাকলেই তো হবে না। সেটা কার্যকর করতে হবে। বিপজ্জনক বাড়ি লেখা রয়েছে, মাইকিং করা হচ্ছে। কিন্তু বাসিন্দাদের সেই বাড়ি থেকে বের করা হচ্ছে না। নজরদারির অভাব ও গাফিলতির কারণেই আরও দু’জনের মৃত্যু হল। পৌরসভার সদিচ্ছার অভাবও রয়েছে।”
Be the first to comment