ভারতের শহরগুলির মধ্যে দূষণের শিরোপা রাজধানী দিল্লির দখলে। কিন্তু দিল্লিকেও এ বার টেক্কা দিচ্ছে কলকাতা। অন্তত নভেম্বর মাসে তো সেটাই ধরা পড়েছে দূষণের সূচকে।
রবিবার, ২৫ নভেম্বর এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স ছাপিয়ে গেছে ৪০০’র সূচক। রবিবার এই সূচক ছিল ৪০৯। ৪০০ পেরিয়ে যাওয়া মানেই এই পরিবেশ প্রচণ্ড উদ্বেগজনক বলেই মনে করছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মনিটরিং স্টেশনে ধরা পড়েছে এই সূচক। ৪০০ অতিক্রম করা মানেই তা ‘সিভিয়ার’ ক্যাটেগরিতে পড়ে, জানিয়েছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা। শুধুমাত্র এ দিনই নয় ৯ থেকে ২৫ নভেম্বরের মধ্যে সাতদিন কলকাতার দূষণের পরিমান ছাপিয়ে গেছে রাজধানী দিল্লিকে।
দিওয়ালির সময় দিল্লির অবস্থা ছিল সবথেকে সঙ্কটজনক। দূষণের সূচক ছাপিয়ে গিয়েছিল ৫০০। তার ফলে বন্ধ রাখতে হয়েছিল স্কুল-কলেজ। লোকজনের বাড়ি থেকে বেরানো পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কীভাবে এই সমস্যা মোকাবিলা করা উচিত, তা বোঝা যাচ্ছিল না। বিশ্বের সবথেকে দূষিত শহর বেজিং অবশ্য এর মধ্যেই বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। রাস্তা থেকে প্রায় ৯০ শতাংশ প্রাইভেট গাড়ি তুলে নেওয়া হয়েছে। জনগনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সরকারের ব্যবস্থা করা গাড়িতেই গন্তব্যস্থলে যেতে হবে। এই পদ্ধতিতে দূষণের পরিমাণ অনেকটাই কমিয়ে ফেলেছে চিনের রাজধানী।
কিন্তু কলকাতার এই ক্রমাগত বাড়তে থাকা দূষণ চিন্তায় ফেলেছে বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের বক্তব্য, এই দূষণের ফলে গত কয়েকদিনে শহরে শ্বাসকষ্টজনিত রোগের পরিমাণ বেড়েছে। সবথেকে বেশি ক্ষতি হচ্ছে শিশুদের। এরকম অবস্থা চলতে থাকলে নতুন প্রজন্ম ছোটবেলা থেকেই শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগতে পারে বলে ধারণা চিকিৎসকদের।
এ ছাড়াও হৃদয়ের রোগের সংখ্যাও বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, মেট্রোপলিটন শহর হওয়ায় কলকাতার দূষণ সূচক ৩০০-৩৯৯ এর মধ্যে ঘোরাফেরা করাটা স্বাভাবিক। কিন্তু যত তা ৪০০’র দিকে এগোবে বা ৪০০ অতিক্রম করবে, তত অবস্থা খারাপ হবে। এখন থেকেই যদি এই সমস্যা দূর করার কোনও উপায় না বের করা যায়, তাহলে অদূর ভবিষ্যতে দেশের দূষণের রাজধানীর তকমাটা কলকাতার মাথাতেই উঠবে, সতর্কবার্তা আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের।
Be the first to comment