ভারতীয় গুপ্তচর সন্দেহে পাক জেলে বন্দি কুলভূষণ যাদবের শুনানির সম্ভাবনা আগামী বছর। ২০১৯ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে৷ শুনানি হবে ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস’ বা আন্তর্জাতিক আদালতে।
পাকিস্তানের জিও নিউজ সূত্রে খবর, পাকিস্তানের তৎপরতায় ‘দ্য ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস’ পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে। ১৯ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য হলেও ১৯ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে যে কোনও দিন শুনানি হতে পারে বলে জানা গিয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালতে কুলভূষণের ফাঁসির সাজা খারিজ করার জন্য আবেদন জানিয়েছিল ভারত।
প্রসঙ্গত, ভারতের দাবি প্রাক্তন নৌ সেনা আধিকারিক কুলভূষণকে অপহরণ করেছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই৷ অন্যদিকে, ভারতীয় গুপ্তচর সন্দেহে কুলভূষণকে বালোচিস্তান থেকে হাতেনাতে ধরা হয়েছে বলে পাকিস্তানের দাবি৷ ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল কুলভূষণকে ফাঁসির নির্দেশ দেয় পাক সেনা আদালত৷ ৮ মে আন্তর্জাতিক আদালতে সেই রায়ের বিরুদ্ধে মামলা করে ভারত৷ ১৮ মে আন্তর্জাতিক আদালত জানায়, ইসলামাবাদ কোনওভাবেই কুলভূষণকে ফাঁসি দিতে পারে না৷ এই ঘটনার কয়েক মাস পড়েই যাদবের সঙ্গে দেখা করতে পাকিস্তানে আসেন তাঁর মা ও স্ত্রী৷ ২৫ ডিসেম্বর যাদবের সঙ্গে দেখা হয় তাঁর পরিবারের৷ কুলভূষণের স্ত্রী চেতনকুল যাদব ও মা অবন্তী যাদব ভারতের ডেপুটি হাই কমিশনার জেপি সিং-কে সঙ্গে নিয়ে দেখা করতে যান।
যদিও এই কুলভূষণের সঙ্গে পরিবারের দেখা করার বিষয়টিকে ‘কনস্যুলার অ্যাকসেস’ বলতে নারাজ পাকিস্তান। তাদের দাবি, মহম্মদ আলি জিন্নার জন্মদিন উপলক্ষে মানবিকতার খাতিরে তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল পরিবারকে। পাক সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী কুলভূষণের সঙ্গে তাঁর পরিবারের দেখা হওয়ার সময় কড়া পাহারায় ছিল পাক রেঞ্জার্স, অ্যান্টি টেরোরিজম স্কোয়াড ও শার্প শ্যুটার্স। দেখা করার আগে জুতো, চুরি এমনকী শাঁখা পর্যন্ত খুলতে হয়েছিল চেতনকুলকে।
এর আগে অন্তত ২২ বার কুলভূষণের সঙ্গে ভারতীয় আধিকারিকদের দেখা করতে দেওয়ার অনুরোধ খারিজ করেছে ইসলামাবাদ। দিল্লির বারবার আবেদন সত্ত্বেও পাকিস্তান এতদিন বলে এসেছে, কুলভূষণের সঙ্গে ভারতীয় আধিকারিকদের দেখা করতে দেওয়া সম্ভব নয়, কারণ তিনি ‘গুপ্তচর’, কোনও সাধারণ ভারতীয় নন। চরবৃত্তি ও অন্তর্ঘাতের লক্ষ্যে তিনি পাকিস্তানে ঢুকেছিলেন বলে তাদের অভিযোগ। যদিও ভারত বরাবরই সেই অভিযোগ খারিজ করে বলে এসেছে, কুলভূষণ
ব্যবসায়িক কাজে ইরানে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে তাঁকে অপহরণ করে পাক গোয়েন্দা সংস্থা ও সেনা।
এখন দেখার পাক জেলে বন্দি কুলভূষণের মুক্তির দাবিতে যে আবেদন ভারত করেছিল, আন্তর্জাতিক আদালত সেই বিষয়ে কী রায় দেয়।
Be the first to comment