অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জর্জরিত রাজ্য বিজেপিতে নিজেকে দিল্লির সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ হিসেবে তুলে ধরতে চেষ্টার কোনও কসুর করছেন না রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার নবান্নের ১৪ তলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বৈঠকের একান্ত বৈঠকের আলোচনার বিষয় শাহ তাঁকে জানিয়ে গিয়েছেন বলে দাবি করলেন শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতার এহেন কর্মকাণ্ডে তাঁকে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না কুণাল ঘোষ। বললেন, “অস্তিত্ব সংকটে ভুগে পাগলামি করছেন শুভেন্দু।”
পূর্বাঞ্চল পরিষদের বৈঠক উপলক্ষ্যে শহরে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। একাধিক ইস্যুতে বাংলা সহ অন্যান্য রাজ্যের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পাশাপাশি নবান্নের ১৪ তলায় আলাদা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেন শাহ। এই একান্ত বৈঠক নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে যখন জলঘোলা হতে শুরু করেছে ঠিক সেই সময়ে সংবাদমাধ্যমের সামনে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করে বসলেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আলোচ্য বিষয় তাঁকে জানিয়ে গিয়েছেন শাহ। শুভেন্দুর এহেন দাবির পর তাঁকে পাল্টা কটাক্ষ করলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। জানালেন, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরকারি কাজে নবান্নে এসেছিলেন সেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাত করেছেন। এটি একটি সরকারি বিষয়। এটা দেখে যে মানসিক চাপ অনুভব করবে শুভেন্দু ও তাঁদের লোকজন এটা আমি সকালেই বলেছিলাম। এটা আসলে ওর আইডেন্টিটি ক্রাইসিস। ওদের দেখাতে হবে আমিও আছি আমাদেরও ডেকেছে।” এরপর কুণাল ঘোষ আর বলেন, “এদিনের সফরে অমিত শাহ সেন্সর করেছেন শুভেন্দুকে। বলেছেন, সুকান্ত রাজ্য সভাপতি তাঁকে মেনে চলতে হবে। দিলীপ ঘোষ সর্বভারতীয় সহসভাপতি তাঁকে মেনে চলতে হবে। এই পরিস্থিতিতে আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভুগে পাগলামি করছেন শুভেন্দু।”
এরপরই শুভেন্দুকে কড়া সুরে কুণাল বলেন, “আসানসোলে শুভেন্দুদের জন্য ৩ জন মারা গেলেন একাধিক জন আহত। এখনও ওখানে যায়নি কেন ও? এখানে বসে গলাবাজি করে বেড়াচ্ছে। নির্লজ্জ, বেহায়া, অমানবিক… এখনও সেখানে না গিয়ে ও এখানে গলাবাজি করছে সস্তার রাজনীতি করছে আইডেন্টিটি ক্রাইসিস ঢাকতে।”
উল্লেখ্য, এদিন অমিত শাহ নবান্ন থেকে বেরোনোর পর তাঁকে বিমানবন্দরে ছাড়তে এসেছিলেন শুভেন্দু অধিকারীরা। বিরোধী দলনেতার দাবি, সেই সময় অমিত শাহর সঙ্গে দেড়-দুই মিনিট কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলেন শুভেন্দু। সেই সময় অমিত শাহর কাছে শুভেন্দু জানতে চেয়েছিলেন, কী বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এদিন তাঁর কথা হয়েছে। এরপর সংবাদমাধ্যমকে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, অমিত শাহ তাঁকে জানিয়েছেন প্রথমে পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের বৈঠকে অ্যাজেন্ডা অনুযায়ী আলোচনা হয়েছে। এরপর একান্ত আলাপে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। শুভেন্দুর কথায়, “বিএসএফ-এর ৭২টি চৌকির জন্য রাজ্য সরকার জমি দিচ্ছে না। বিএসএফ এবং রাজ্য পুলিশের আরও নিবিড় সংযোগের জন্য মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর চেম্বারে অমিত শাহ অনুরোধ করেছেন, যাতে সীমান্তরক্ষীকে সম্পূর্ণভাবে রাজ্য সরকার সহযোগিতা করে। কারণ, পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত এলাকা জাতীয় স্বার্থে ভারতের জন্য খুব মূল্যবান।”
Be the first to comment