আরজি কর কাণ্ডে এবার তৃণমূলের মুখপত্রের সম্পাদকের সঙ্গে মুখপাত্রের বিরোধ প্রকাশ্যে

Spread the love

চিরন্তন ব্যানার্জি, কলকাতা: আরজি করের ঘটনায় এবার তৃণমূলের মুখপত্রের সম্পাদকের সঙ্গে মুখপাত্রের বিরোধ প্রকাশ্যে। আরজি কর কাণ্ডে তৃণমূলের অন্দরেই চলছে সুনামির স্রোত। রবিবাসরীয় সকালে তা আরও প্রখর হল।

প্রসঙ্গত, আরজি করে তরুণী চিকিৎসকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় আরও এক ধাপ এগিয়ে শনিবার রাতে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় এক্স হ্যান্ডেলে পোষ্ট করে তিনি লেখেন, আরজি করে চিকিৎসকের মৃত্যুকে প্রথমে কেন এবং কারা ‘আত্মহত্যা’ বলে চালানোর চেষ্টা করেছিল, তা জানার জন্য কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল এবং আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার দাবি জানালেন সিবিআইয়ের কাছে। পাশাপাশি, যখন গত ১৪ আগষ্ট মহিলাদের রাত দখলের কর্মসূচি ঘিরে তৃণমূলের অনেক নেতাই সমালোচনার ঝড় তোলে, সে সময়ে রাজ্যের শাসকদলের তরফে কর্মসূচিকে প্রথম সমর্থন করেছিলেন সুখেন্দু। জানিয়েছিলেন, তিনি মেয়ের বাবা, নাতনির দাদু। তাই তিনি মনে করেন, এই সময়ে প্রতিবাদে শামিল হওয়াটা জরুরি। ১৪ তারিখ দক্ষিণ কলকাতার যোধপুর পার্কে নেতাজি মূর্তির সামনে বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ধর্নায় বসেছিলেন সুখেন্দু। নিজের মতো করে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন।


এই পরিস্থিতিতে শনিবার রাতে তৃণমূলের মুখপত্রের সম্পাদকের এক্স হ্যান্ডেলের পোষ্ট নিয়ে রবিবার সকালে সমালোচনা করলন দলেরই মুখপাত্র। কুণাল ঘোষ তিনি এক্স হ্যান্ডেলে ওই পোস্ট শেয়ার করে লিখেছেন, ‘‘আমিও আরজি কর-কাণ্ডের সুবিচার চাই। কিন্তু সিপিকে নিয়ে যে দাবি সুখেন্দু করেছেন, আমি তার তীব্র বিরোধিতা করছি। ঘটনার কথা জানার পর থেকে তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন। সিপি ব্যক্তিগত ভাবে ওঁর কাজ করেছেন। তদন্ত সঠিক পথেই চলছিল। আমাদের সিনিয়র নেতার কাছ থেকে এই ধরনের পোস্ট দুর্ভাগ্যজনক।’’
উল্লেখ্য, কোনও দলের মুখপত্রের সম্পাদক যা বলছেন, রাজনীতিতে সাধারণত তাকেই দলের বক্তব্য হিসাবে ধরে নেওয়া হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, সম্পাদক হিসাবে সুখেন্দুর নাম থাকলেও সমাজমাধ্যমে তিনি যা বলছেন, তার সঙ্গে তৃণমূলের মুখপত্রের বক্তব্য মিলছে না। কিছু দিন আগে তৃণমূলের রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয় সুখেন্দুকে। সেই স্থানে আনা হয়েছে নাদিমুল হককে। তৃণমূল সূত্রের খবর, সুখেন্দুকে যে রাজ্যসভায় দ্বিতীয় বার মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের একাংশ তা চাননি। কিন্তু রাজ্যসভার এক সাংসদ সুখেন্দুর মনোনয়নের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দরবার করেছিলেন। তাই তিনি দ্বিতীয় বার মনোনয়ন পেয়েছিলেন। তবে এ বার আর মনোনয়ন পাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তৃণমূলের অনেকে মনে করছেন, এই সমস্ত ক্ষোভ থেকেও সুখেন্দু আরজি কর প্রসঙ্গে দলের বিরুদ্ধে গিয়ে থাকতে পারেন।


অন্যদিকে, সুখেন্দুর এই পোষ্টেকে হতিয়ার করে মাঠে নেমে পরেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তিনিও সুখেন্দুর পোষ্টটা শেয়ার করে এক্স হ্যান্ডেলে পোষ্ট করে লেখেন, “তৃণমূল, আরজি করে চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুন ছাড়াও যে অন্য ঘটনার সঙ্গে সন্দীপ এবং সিপি জড়িত, তা তোমাদের দলের সদস্যও জানেন। এই সরকার আরও নীচে নেমে গিয়েছে। দলের সদস্যেরাও তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন।’’

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*