বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সাংসদ দিলীপ ঘোষ আজ সকালে সংবাদমাধ্যমের কাছে আবারও তৃণমূলের বিরুদ্ধে তোপ দাগার পাশাপাশি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন। দিলীপবাবুকে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্ন ছিল, কালীঘাটেও কি পদ্ম ফুটবে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই কার্তিক বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, যারা দেশ ও দশের কথা বলে তারাই নিজের পরিবারের জন্য করে। তবে কি মমতার বাড়িতেও পদ্ম ? এই উক্তির জবাবে দিলীপ বাবু বলেন, অসম্ভব কিছুই নেই, শুভেন্দুবাবু বলেছেন কালীঘাটেও পদ্ম ফোটাবেন। পরিবর্তনের বছর চলছে সবই সম্ভব। এছাড়াও তিনি বলেন, বিজেপির বিভিন্ন জায়গায় সভাতে বাধা প্রদান করছে রাজ্য পুলিশ। তারা যে মাঠে সভা করতে চাইছে, অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করা হচ্ছে। এছাড়াও অনুমতি দিলেও বলা হচ্ছে মাঠের কোনো জমিতে পা দেওয়া যাবে না। বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে পুলিশের তরফে। তবে এসব করে কোনো লাভ নেই। এইভাবে আমাদের আটকানো যাবে না, এমনটাই স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন দিলীপ ঘোষ।
জেলা সভাপতির পদ থেকে শিশির অধিকারীর অপসারণ প্রসঙ্গে প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, উনি বলিষ্ঠ অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। উনি জানেন কখন কি করতে হবে। আমাদের ভেবে লাভ নেই, এসব তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ ছাড়াও চিট ফান্ড প্রসঙ্গে কুণাল ঘোষের দাবি অবিলম্বে শোভন চট্টোপাধ্যায় ও মুকুল রায়ের গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গে দিলীপবাবু বলেন, যার লেজ কেটে যায় সে চায় সবার লেজ কাটুক। গ্রেপ্তার করতে হলে তো সবার আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে করা উচিত। উনি তো চিট ফান্ডের টাকায় বিমান ব্যবহার করেছেন, অ্যাম্বুলেন্স উদ্বোধন করেছেন। কুণাল ঘোষ দাবি করুক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেপ্তারের। বাকি এই বিষয় সিবিআই বুঝবে।
গতকাল রাতের বাগবাজারের অগ্নিকাণ্ডে স্থানীয় মানুষের দাবি সেখানে আগুন ইচ্ছাকৃত লাগানো হয়েছে এই প্রসঙ্গে দিলীপ বাবু বলেন, সঠিক জানা নেই কি হয়েছে। তবে অগ্নিকাণ্ডের ফলে প্রচুর ক্ষতি হয়েছে বহু মানুষের। কেউ কেউ প্রাণ হারিয়েছেন। পুলিশের তরফে লাঠিচার্জ হয়েছে। এমপি-এর বিরুদ্ধে স্লোগান চালানো হয়েছে। সরকারের উচিত এই অসহায় মানুষগুলোর পাশে থাকার। এর আগেও কলকাতায় এমন বিভিন্ন বাজার বা বস্তি এলাকায় আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে বহুতল নির্মাণের জন্য। সত্যি যদি এই চক্রান্ত হয়ে থাকে তবে যথাযথ তদন্তের অবশ্যই প্রয়োজন।
তৃণমুলের জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাবি আগামী মে মাসে ৭ জন বিজেপি সাংসদ তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেবেন। এই প্রসঙ্গে দিলীপবাবু বলেন, এক সময় মদন মিত্রও এসব বলতেন এখন তাহলে জ্যোতিপ্রিয়বাবুও বলছেন খুব সন্দেহ হচ্ছে সব ঠিক আছে তো! আমার পার্টি থেকে একজন বুথ সভাপতিকে নিয়ে গিয়ে দেখাক। যার নিজের পার্টির মন্ত্রী, এমএলএ, এমপি দল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, সে এসব স্বপ্ন দেখছেন? এমন ভাবেই তিনি ব্যঙ্গ করেন তৃণমূলকে।
গতকাল সুদীপ জৈন পুলিশ ও জেলাশাসকদের সাথে বৈঠক করেন ও বেশ কিছু সতর্কতা বার্তা দেন। এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, ইলেকশন কমিশন তার নিজের কাজ করছে। পশ্চিমবঙ্গে যে নির্বাচন হয় তা সারা দেশের মধ্যে ব্যতিক্রম। লোকসভা নির্বাচনে সারা দেশের ৫০০ সিটের কোথাও কোনো গন্ডগোল হল না একমাত্র পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের ৪২টিতেই গন্ডগোল হয়। এখানেই একমাত্র নানা রকম অসভ্যতা হয়। সেই কারণেই ইলেকশন কমিশন এখন পুঙ্খানপুঙ্খভাবে বিচার করবেন যাতে নির্বিঘ্নে নির্বাচন হয়।
অনুব্রত মণ্ডলের ২০০টি আসন দখলের জন্য ঈশ্বরের কাছে যজ্ঞ করেছেন এই প্রসঙ্গেও তিনি ব্যাঙ্গাত্মক সুরে বলেন, লোকসভার আগেও তো উনি অনেক কিছু করেছিলেন গো দান, ব্রাহ্মণ ভোজন ইত্যাদি তার পরিণামে ১২টি আসন হারালেন। আবারও কল্পনা করছেন করুন যদি ভগবান দয়া করেন। তবে ২০০টি আসন আমরাই পাবো এটা নিশ্চিত। সারা বছর লুটপাট করে নির্বাচনের আগে ভগবানকে ঘুষ দিয়ে কি হবে?
এইভাবেই আজ তিনি স্পষ্ট ভাবে তৃণমূলের বিরুদ্ধে কটাক্ষ ও চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। এখন অপেক্ষা আসন্ন নির্বাচনের ফলাফলের জন্য।
Be the first to comment