কুশয়হা দম্পতি খুনের ঘটনায় ধৃত ভূমিকা শেওয়ারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন মৃত দম্পতির সহকর্মীরা

Spread the love

কুশয়হা দম্পতি খুনের ঘটনায় ধৃত ভূমিকা শেওয়ারকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন মৃত দম্পতির সহকর্মীরা। ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য অভিযুক্ত যুবক সঞ্জয় তামাং ও তাঁর প্রেমিকা ভূমিকা শেওয়ারকে গতকাল ঘটনাস্থানে নিয়ে যায় বাগডোগরা থানার পুলিশ। সেখান থেকে ফের থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় বিক্ষোভের মুখে পড়ে তারা। সেই সঙ্গে ওই বাড়ি থেকে ফরেন্সিক টিম আঙুলের ছাপ সহ বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করে।

গতকাল দুপুরে সিনিয়র সায়েনটিস্ট নতুন ঘটকের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি ফরেন্সিক টিম কলকাতা থেকে বাগডোগরায় কুশয়হা দম্পতি বাড়িতে পৌঁছায়। সেখান থেকে রক্ত ও ভিসেরার নমুনা সংগ্রহ করে তারা। এরপরই তাদের উপস্থিতে পুলিশ ঘটনার পুনর্নির্মাণের জন্য ধৃত ভূমিকা ও তাঁর প্রেমিক সঞ্জয় তামাংকে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রায় এক ঘণ্টা ধরে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়। কীভাবে পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছিল তা দেখায় সঞ্জয়।

এরপর অভিযুক্তদের থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় ওই বাড়ির নিচে ভূমিকাকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কেটারিংয়ের কাজে যুক্ত কুশয়হা দম্পতির সহকর্মীরা। কেন এই খুন তা ভূমিকার কাছে জানতে চান তাঁরা। ওই সময় ভূমিকা পালটা বলে, খুনের জন্য তার কোনও অনুশোচনা নেই। এরপরই পুলিশের হাত থেকে ভূমিকাকে ছিনিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা করা হয়। কোনওমতে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে ভূমিকা ও সঞ্জয়কে থানায় নিয়ে যায়।

পুলিশ সূত্রে খবর, পুনর্নির্মানের সময় সঞ্জয় পুলিশকে দেখান, খুনের ঘটনার দিন বাড়ির সমস্ত গেট খোলা ছিল। রাত ১২ টার পর সে প্রথমে বাড়িতে ঢুকে ভূমিকা ও অজয়ের শাশুড়ির ঘরের দরজা বাইরে থেকে লক করে দেয়। এরপর ডাইনিং হলে থাকা একটি বিছানায় ঘুমিয়ে থাকা অজয় কুশয়হার মাথায় ডাম্বেল স্টিক দিয়ে তিনবার আঘাত করে। ওই সময় অজয়ের চিৎকারে তাঁর স্ত্রী মিনা জেগে গেলে তাঁকেও ওই ডাম্বেল স্টিক দিয়ে মেরে ফেলে সঞ্জয়। গোটা কাজটি সে হাতে গ্লাভস পড়ে করেছিল। এরপর আলমারি থেকে টাকা ও সোনার অলঙ্কার লুঠ করে পালিয়ে যায়। অবশ্য ভূমিকা পুলিশের কাছে দাবি করেছে, খুনের বিষয়ে কিছুই জানত না সে।

যদিও, গোটা ঘটনাটি নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় রয়েছে পুলিশ। তদন্তকারীদের এখনও কয়েকটি বিষয় যথেষ্ট ভাবাচ্ছে। তাদের প্রাথমিক অনুমান, প্রতিদিন রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ বাড়ির গেটে তালা পরে যেত। ঘটনার দিনও একই সময়ে তালা পড়েছিল। সঞ্জয় জানিয়েছে সেদিন গেট খোলা ছিল। তাহলে সেদিন বাড়ির সব তালা ভূমিকাই খুলে দিয়েছিল বলে প্রাথমিক ধারণা পুলিশের। শুধু তাই নয়, খুনের সময় ভূমিকার উপস্থিতির পাশাপাশি তৃতীয় ব্যক্তি ছিল বলেও মনে করছে পুলিশ। যদিও এসব প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি। আরও জানা যাচ্ছে, ঘটনাস্থল থেকে আলাদা আলাদা আঙুলের ছাপ লক্ষ্য করেছে ফরেনসিক টিম। সেগুলি পরীক্ষার জন্য ফিংগার প্রিন্ট বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নেবে পুলিশ। সবকটি আঙুলের ছাপের নমুনা নেওয়া হয়েছে।

খুনের ধরন ও বেশ কিছু জিনিষ দেখে ফরেনসিক দল মনে করছে দম্পতিকে কিছু খাইয়ে বেহুশ করে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। সিনিয়র সায়েনটিস্ট নতুন ঘটক বলেন, “ঘটনাস্থান থেকে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এগুলি পুলিশকে পাঠাতে বলা হয়েছে। নমুনা ল্যাব পরীক্ষা করার পর সমস্ত বিষয় পরিষ্কার হবে। পরীক্ষার পর আমরা দ্রুত রিপোর্ট পাঠাবো।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*