মৌসুমী রায় সরকার (বিভাগীয় প্রধান)
আজকে আমি প্রথমেই ‘রোজদিন.ইন’ পোর্টালের তরফ থেকে সমস্ত রন্ধন উৎসাহী তথা রন্ধন শিল্পী বন্ধুদের অসংখ্য ধন্যবাদ জানাবো কারণ তাঁরা পাশে না থাকলে আমরা হয়তো এতো অল্প দিনে এতো সাফল্য পেতাম না। স্বাধীনতা দিবসের শুভদিন থেকে আমাদের মহিলাদের অত্যন্ত প্রিয় সেগমেন্ট ‘নব আনন্দে জাগো’-এর যে নতুন যাত্রা পথ শুরু হয়েছে তাতে আমাদের রন্ধন উৎসাহী বন্ধুদের যে এই ভাবে পাশে পাবো তা ছিল আমাদের ভাবনার অতীত। খুব ছোট্ট একটা ইচ্ছাকে আমল দেওয়াই ছিল আমাদের ‘রোজদিন.ইন’-এর মূল লক্ষ্য। যে সকল মহিলারা দিবারাত্র নিজেদের পরিবারের কাছের মানুষদের জন্য বিভিন্ন রান্নাবান্না করে তাদের মন ভালো রাখার চেষ্টায় অবিরত তাঁদের রন্ধন শিল্পকে একটু স্বীকৃতি দেওয়ার অঙ্গীকার থেকেই ‘নব আনন্দে জাগো’ সেগমেন্ট এই ক’দিনেই যথেষ্ট সাড়া জাগিয়েছে। আর তাতে আমরা সত্যিই আপ্লুত।
কিন্তু প্রতি সোমবার আমরা ‘রোজদিন.ইন’ টিম অপর এক নতুন ভাবনার রূপ দিয়েছি রন্ধন শিল্প জগতের বন্ধুদের নিয়ে। যে সকল মহিলারা তাঁদের রন্ধন শিল্পের পারদর্শীতার নমুনা বিভিন্ন ম্যাগাজিন, ফুড গ্রুপ এবং প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে প্রায় প্রতিদিন নিজেদের অভিনবত্বের ছাপ দিয়ে চলেছেন, এই সেগমেন্ট আমার সেই সব রন্ধন শিল্পী বন্ধুদের নিয়ে। এখন থেকে প্রতি সোমবার ‘রোজদিন.ইন’ এই সব রন্ধন শিল্পীদের নিজেদের শিল্প মাধুর্য দেখানোর আরো একটি প্লাটফর্ম হিসাবে তাঁদের পাশে থাকবে। ‘রোজদিন.ইন’-এর সম্পাদক মন্ডলী এবং ‘আহারে বাহারে’ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসাবে আমি এই সব অভিজ্ঞ রন্ধন শিল্পী বন্ধু মহলের কাছে একটাই আবদার রাখবো আপনারা আমাদের পাশে বন্ধু হিসাবে থাকুন। আশা করি আগামী দিনে আপনারাও আমাদের থেকে যথাযথ বন্ধুত্বের মর্যাদা পাবেন।
আজকে আমাদের ‘রোজদিন.ইন’-এ ‘তুমি সন্ধ্যার মেঘ মালা’ সেগমেন্টে যার রন্ধন শিল্প তুলে ধরা হচ্ছে তিনি রন্ধন জগতে একজন বিশেষ ব্যক্তিত্ব অতসী সরকার। আক্ষরিক অর্থে তিনি কোনো ম্যাগাজিনে রেসিপি শেয়ার না করলেও বিভিন্ন রান্নার গ্রুপ গুলোতে তাঁর রেসিপি বিশেষ ভাবে সাড়া ফেলেছে। অতসী দি ব্যক্তিগতভাবে নীরব ভাবে কাজ করার পক্ষপাতী। তিনি একদিকে যেমন রান্নাবান্নায় পারদর্শী, ঠিক তেমনি তাঁর নিজের কস্টিউম জুয়েলারীর বুটিকও আছে। সেখানে সমস্ত জুয়েলারী তিনি নিজে একা হাতে তৈরী করেন। আসলে অতসীদির মধ্যে একটা শৈল্পিক মনন বিরাজমান। আর সেটাই কখনো রান্না, কখনো জুয়েলারীর সৃজনশীলতার মধ্যে দিয়ে ফুটে ওঠে। অতসী দির ছোটোবেলা কল্যাণীতে কেটেছে। ওখানেই স্কুল এবং ঋষি বঙ্কিম চন্দ্র কলেজ থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেন।
কলেজ জীবন শেষ হতে না হতেই তাঁর বিবাহিত জীবন শুরু হয়ে যায়। বিয়ের পরপর অতসীদি অতটা এখনকার মত রান্নাবান্না পারতেন না। তাঁর রান্নাবান্নার মূলত হাতে খড়ি তাঁর শাশুড়ি মায়ের কাছ থেকেই। তারপর অতসী দি ধীরে ধীরে রান্নাবান্নায় বেশ পটু হয়ে উঠতে থাকেন। দিদির মেয়ে এবং স্বামী খুব খাদ্যরসিক বলেই দিদির রান্নার প্রতি উৎসাহ আরো দ্বিগুন বেড়ে যায় এবং নিত্য নতুন রান্না অতসী দি ট্রাই করতে শুরু করেন। আর সফলও হন তাঁর এই প্রচেষ্টাতে। দিদির মেয়ে মিষ্টি খেতে খুব ভালোবাসে বলে দিদি সব ধরণের রান্না জানলেও মিষ্টির প্রতি যে তাঁর একটা বিশেষ ভালো লাগা এবং মুন্সিয়ানা আছে সেটা অস্বীকার করার জায়গা নেই। অতসী দির জামাই ও খুবই খাদ্যরসিক। সেইজন্য অতসী দির মেয়ের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরও রান্নার প্রতি ভালোবাসা অটুট রয়ে গেছে।
দিদি বর্তমানে এখন বিরাটির বাসিন্দা। অতসী দি নিজের জগৎ নিয়ে খুব ভালো আছেন। আমাদের ‘রোজদিন.ইন’ পোর্টালের তরফ থেকে দিদির প্রতি অনেক শুভেচ্ছা রইল। দিদি যেন আগামী দিনে রন্ধন জগতে একটা বিশেষ নক্ষত্র রূপে নিজেকে চিহ্ণিত করতে পারেন এবং তাঁর কস্টিউম জুয়েলারী বুটিকের জুয়েলারী যেন ঘরে ঘরে মহিলাদের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন সেই শুভ কামনাই রইলো।
অতসী সরকার
আজকের রেসিপি- “লবঙ্গ লতিকা”
উপকরণ: ময়দা- ২ কাপ, নুন, ঘি- ৪ চামচ, নারকেল কোরা- ১ কাপ, খোয়া ক্ষীর- ১০০ গ্রাম, সাদা তেল, চিনি- ২ কাপ, এলাচ- ৪ টি।
প্রণালী: প্রথমে কড়াইতে নারকেল কোরা, চিনি ও খোয়া ক্ষীর দিয়ে পাক দিয়ে নামিয়ে নিতে হবে। ময়দা, নুন ও ঘি দিয়ে এমনভাবে ময়াম করতে হবে যাতে হাতে মুথ হয়ে যায়। তারপর জল দিয়ে মেখে ৩০ মিনিট ঢাকা দিয়ে রাখার পর লেচি কেটে লুচির মতো বেলে মধ্যিখানে পুর দিয়ে দুপাশ থেকে মুড়ে উল্টে নিয়ে আবার দুপাশ মুড়ে নিয়ে মধ্যে একটা লবঙ্গ আটকে দিতে হবে।
এবার ২ কাপ চিনি ও ২ কাপ জল দিয়ে একটা ঘন রেস করে রাখতে হবে। ৪ টি এলাচ রেসে দিয়ে দিতে হবে। এবার কড়াইতে সাদা তেল গরম করে আঁচ কমিয়ে সময় নিয়ে ভেজে তুলে নিয়ে রোদে ফেলে কিছুক্ষণ রেখে এপিঠ ওপিঠ করে তুলে নিলেই তৈরি হয়ে গেলো “লবঙ্গ লতিকা”। তবে আর দেরি না করে চটপট তৈরি করুন “লবঙ্গ লতিকা”। আর জানান, আপনাদের মূল্যবান মতামত।
Be the first to comment