ফাইল তৈরি হলেও জমি মাফিয়াদের এখনই গ্রেফতারের পথে হাঁটতে নারাজ শিলিগুড়ি পুলিশ

Spread the love
জমি মাফিয়ার খোঁজে পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগ একাধিক ফাইল তৈরি করেছে। তবে বাস্তবে গ্রেপ্তারির ক্ষেত্রে উলটো ছবি শিলিগুড়িতে। দিন কয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক সভায় এনিয়ে প্রকাশ্যেই সরব হন। পুলিশ আধিকারিকদের নির্দেশ দেন জমির বেআইনি কারবারকে রেয়াত করা যাবে না। পাশাপাশি সরকারি জমি দখল বা বেআইনিভাবে ব্যক্তিগত জমি একাধিকবার বিক্রির চক্র ভাঙতে নির্দেশও দেন তিনি। এছাড়া নিউ জলপাইগুড়ি থানার পুলিশকর্মীদের ডেকে জানান জড়িত কাউকে ছাড়া যাবে না। দলের কেউ জড়িয়ে পড়লেও ব্যবস্থা নিতে হবে।
এরপরই শিলিগুড়িতে তৎপর হয় পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগ। প্রভাবশালী জমি মাফিয়াদের নামের তালিকা ও জমিকে কেন্দ্র করে এলাকায় কোটি টাকার কারবার নিয়ে একাধিক রিপোর্ট জমা পড়ে পুলিশ কমিশনারের দপ্তরে। তবে বিরোধীদের অভিযোগ, রিপোর্ট এলেও ধরপাকড়ের ক্ষেত্রে চাঁইদের কাউকেই গ্রেপ্তার করার পথে হাঁটছে না পুলিশ। 
গত কয়েক দিনে মোট ১৩ জনকে জমির অবৈধ কারবারের অভিযোগ গ্রেপ্তার করা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু তারা কেউ মাফিয়া নয়। বরং রাঘব বোয়ালদের অনুগামী মাত্র। এই চুনোপুঁটিদের ধরেই এখন কাগজে কলমে পুলিশি পদক্ষেপ দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ।
বিরোধীদের অভিযোগ, ডাবগ্রাম, ফুলবাড়ি, প্রধাননগর, চম্পাসারী এলাকায় কারা জমির কারবার করছে, তা স্থানীয়দের অজানা নয়। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তা শুধু জানেন না পুলিশ কর্তারাই। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আগে যেসব মামলায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি, সেই মামলাগুলি খুঁজে বের করে চুনোপুঁটিদের এবার গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। 
এবিষয়ে মেয়র অশোক ভট্টাচার্য বলেন, “কারা জমি কেনাবেচা করছে, কোথায় নজরানা দিতে হয় সেসব বাসিন্দারা জানেন। অজানা কারণে তা শুধু জানে না পুলিশ। শুনেছি একাধিক রিপোর্ট তৈরি হয়েছে। কিন্তু মজার বিষয় হল মাথারা বহাল তবিয়তেই আছেন। গটআপের ভিত্তিতে নিচু তলায় কিছু গ্রেপ্তার দেখিয়ে থমকে যাচ্ছে তদন্ত।” পুলিশ কমিশনার ভরতলাল মিনার বক্তব্য জানা না গেলেও উপ নগরপাল তরুণ পাল বলেন, “জমি নিয়ে অভিযোগ পেলেই আমরা অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করছি। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে আরও নাম মিললে তাদেরও গ্রেপ্তার করা হবে। কাউকে আড়াল করার প্রশ্নই নেই।” 
জানা গিয়েছে, জমির কারবারিরা পুলিশের সঙ্গে বোঝাপড়া করে চুনোপুঁটিদের এগিয়ে দিচ্ছে গ্রেপ্তারির জন্য। যারা গ্রেপ্তার হচ্ছে তাদের পরিবারের দেখভাল করছে মাফিয়ারাই। এতে একদিকে যেমন আসল চাঁইরা আড়ালে থাকছে, তেমনি পুলিশ ওই মামলাগুলিতে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দেখাতে পারছে।
শাসকদলের নেতাদের অবশ্য দাবি, প্রশাসনিক কাজকর্মে দল নাক গলায় না। পুলিশকর্তারা তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদেরই গ্রেপ্তার করছেন। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশকর্তা জানান, কিছু নামের তালিকা আমরা সর্বোচ্চ মহলে জানিয়েছি। সবুজ সংকেত এলেই এনিয়ে অভিযান হবে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*