বন দফতরের কর্মীদের সামনেই খাঁচায় বন্দি চিতাবাঘকে জখম করলেন গ্রামবাসীরা

Spread the love

বন দফতরের কর্মীদের সামনেই খাঁচায় বন্দি চিতাবাঘকে মেরে জখম করলেন গ্রামবাসীরা। খাঁচার বাইরে বেড়িয়ে থাকা ল্যাজে একের পর এক কাঠের টুকরো দিয়ে আঘাত হানলেন তাঁরা। সেই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে বিতর্ক।
মঙ্গলবার সকালে আলিপুরদুয়ারের ধুমচিপাড়া চা বাগানে পাতা খাঁচায় বন্দি হয় একটি পূর্ণবয়স্ক  পুরুষ চিতাবাঘ। মাস তিনেক ধরেই চিতাবাঘের আতঙ্কে ঘুম ছুটেছে এই চা বাগানের বাসিন্দাদের। 

১৬ ডিসেম্বর বিকেলে এই চা বাগানে ৫ বছরের একটি শিশুকে খুবলে খেয়েছিল চিতাবাঘ। ১৭ ডিসেম্বর এই চা বাগানেই ৭১ বছরের এক বৃদ্ধের উপর হামলা চালায় একটি চিতাবাঘ। প্রাণে বাঁচলেও এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।

এর আগে  ১৩ অক্টোবর এই চা বাগানেই একতা ছেত্রী নামে একটি শিশুকে একই কায়দায় আক্রমণ করেছিল একটি চিতাবাঘ। সে বারও ওই শিশুর গলায় কামড়ে ধরেছিল চিতাবাঘটি। তবে কোনও ভাবে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিল ওই শিশু। এক মাসের ব্যবধানে ফের চিতাবাঘের হামলায় আতঙ্কে ঘুম ছুটেছে চা বাগানের বাসিন্দাদের। পাশাপাশি ক্ষোভে ফুঁসছেন তাঁরা। এই অবস্থায় মঙ্গলবার সকালে চিতাবাঘটিকে বন দফতরের পাতা খাঁচায় বন্দি দেখেই স্থানীয় মানুষজন এটিকে মেরে ফেলার দাবি জানাতে শুরু করেন। এলাকার বাসিন্দা সোনম মুন্ডা বলেন, “ এই চিতাবাঘ নিয়ে জঙ্গলে ছেড়ে দেবে বন দফতর। তারপর আবার বন থেকে বেরিয়ে এই চা বাগানে হামলা চালাবে এই চিতাবাঘ। সেই কারণে একে মেরে ফেললেই সমস্যার সমাধান হবে।”

চিতাবাঘ খাঁচা বন্দি হয়েছে এই খবর পেয়েই জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের মাদারিহাট রেঞ্জের কর্মীরা ঘটনাস্থলে চিতাবাঘটিকে উদ্ধার করতে যান। সেই সময় খাঁচা ঘিরে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বাসিন্দারা। চিতাবাঘটিকে মেরে ফেলার দাবি তোলেন তাঁরা। খাঁচার ভেতরে থাকা চিতাবাঘটিকে অনেকেই খোঁচাতে শুরু করে। খাঁচার বাইরে বেরিয়ে থাকা চিতাবাঘের ল্যাজে কাঠের বড় বড় টুকরো দিয়ে আঘাত করার ছবি ক্যামেরা বন্দি হয়েছে। সাহস করে কোনও বনকর্মীকে বাধা দিতে দেখা যায়নি।
জলদাপাড়া বন্যপ্রাণ বিভাগের ডিএফও কুমার বিমল জানান, এর আগে ধুমচিপাড়া চা

বাগানে চিতাবাঘের হামলায় ৫ বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এর আগেও এই চা বাগানের চিতার হামলায় এক শিশু ও এক বৃদ্ধ জখম হয়েছিলেন। সেই কারণে এলাকায় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ছিল। তিনি বলেন, ‘‘সেই ক্ষোভ থেকে এই রকম আচরণ করেছেন স্থানীয়রা। আমরা চিতাবাঘটিকে উদ্ধার করে খয়েরবাড়ি পুনর্বাসন কেন্দ্রে রেখেছি। চিতাবাঘটিকে আবার জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে। পরিস্থিতি বুঝে কাজ করতে হয় বনকর্মীদের।”

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*